ঢাবি: খুব বেশিদিন আগের কথা নয় যখন জিম্বাবুয়ে-কেনিয়ার সঙ্গে একটি ম্যাচ জিতলেও রঙের ছড়াছড়ি চলত পুরো দেশ জুড়ে। রাজধানীর অলিগলিসহ মফস্বল শহরগুলোও হয়ে উঠতো রঙিন।
এই যেমন পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ জয়। দর্শকদের ভাব দেখে বোঝার উপায় নেই যে এশিয়ার তিন পরাশক্তির একটির সঙ্গে এটিই প্রথম সিরিজ জয়। বোঝার উপায় নেই ক্রিকেট বিশ্বে পাকিস্তান নামক এক পরাশক্তিকে এই মাত্রই গুড়িয়ে দিল বাংলাদেশ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ জেতার পর মাসুম বিল্লাহ নামের এক টাইগার সমর্থক বলছিলেন, আরে এতে উল্লাস করার কি আছে! পাকিস্তানতো এখন আমাদের বিসিবি একাদশের কাছেই হারে!
তার কথা শুনে আপনি কিভাবে বুঝবেন বলুন যে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওটাই ছিল দীর্ঘ ১৬ বছর পর পাওয়া পরম আরাধ্যের জয়! জয়ের খুব কাছে গিয়েও হারতে হয়েছে ৩০টি ম্যাচ। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর কেবল পাকিস্তানকেই হারাতে পারেনি বাংলাদেশ!
রোববারের সিরিজ জয়ী ম্যাচ জেতার পর সমর্থকদের উল্লাসে যেখানে বাংলার আকাশ বাতাশ প্রকম্পিত হওয়ার কথা তেমনটি আর হল কই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে জনা পঞ্চাশেক সমর্থক জড়ো হলেন বটে। কিন্তু টিএসসি এলাকায় উল্লাসকারীদের এ সংখ্যা নিতান্তই সামান্য!
টিএসসিতে কয়েকজন সমর্থকের সঙ্গে কথা বলে অনেকটা অবাকই হতে হল! সমর্থকরা যতটা না টাইগারদের প্রশংসা করলেন তার চেয়ে তারা অনেক বেশি হতাশ পাকিস্তানের পারফরমেন্সে! বাংলাদেশের জয়ের বিকল্প তারা ভাবতে পারেন না। কিন্তু এরকম একপেশেভাবে হেরে না গিয়ে পাকিস্তানের কাছে একটু প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রত্যাশা তাদের!
মাস্টারদা’ সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ ইব্রাহিম সুজন বলছিলেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ জিতেছে এতে অবশ্যই খুশি। তবে পাকিস্তান যেভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করছে এতে হতাশ! আশা করছি, বাংলাদেশ অবশ্যই পাকিস্তানকে ‘বাংলাওয়াশ’ করবে তবে পাকিস্তান যেন আরেকটু প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারে। তাহলে আর এমন একপেশে ম্যাচ দেখতে হবে না!
কবি জসীম উদ্দীন হলের শিক্ষার্থী সামিন আবদুর রহমান বললেন, আমিতো দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম যে বাংলাদেশ কি পাকিস্তানের সঙ্গে খেলছে না আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলছে! টাইগারদের পারমেন্স ছিল দুর্দান্ত। যার ফলে পাকিস্তানের মত একটি বড় দলকেও কিনা তারা একেবারেই হেসে খেলে হারাল! আশা করি জয়ের এ ধারাটা তারা অব্যাহত রাখবে ওয়ানডে সিরিজ শেষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলোতেও।
কথা হল আরও কয়েকজন সমর্থকের সঙ্গে। বাংলাদেশ যে প্রকৃত অর্থেই এখন একটি ‘বড় দল’ এ বিষয়ে কারও যেমন কোন দ্বিমত নেই। তেমনি বিশ্বকাপও এখন যে কেবল আর দিবা স্বপ্ন নয় এ বিষয়েও তারা একমত।
সমর্থকদের প্রত্যাশা শুধু পাকিস্তান নয় বিশ্বের যেকোনো দলের সঙ্গে সিরিজ জেতার ক্ষমতা বাংলাদেশের এই দলটার রয়েছে। বিশ্বকাপের এবারের আসরেই যে চমক তারা বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছে আগামী বিশ্বকাপগুলোতে সেটি আর চমক থাকবে না। সেটি হয়ে যাবে বাংলাদেশের প্রাপ্য। অচিরেই টাইগারদের হাতে বিশ্বকাপও দেখছেন কেউ কেউ। তারা মনে করেন, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাশরাফিরা যে পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশ দলকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৫
এসএ/কেএইচ/