শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম থেকে: দেশের হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। ২০১১ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচসহ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসর বসে এই মাঠে।
মাশরাফি-সাকিবদের চোখ ধাঁধানো ক্রিকেটশৈলী দেখতে উপচেপড়া দর্শক জমে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। মাঠের পাশাপাশি এখানকার দর্শকদেরও সুনাম দেশে-বিদেশে। অথচ গ্যালারির বেহালদশায় সেই দর্শকরাই এখন উপেক্ষিত। প্রায় প্রতিটি গ্যালারিতে দর্শকদের বসার স্থানগুলো সংস্কারের অভাবে ভগ্নদশা।
বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এক কথাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেটের অগ্রগতিতে দর্শকের ভূমিকা, দর্শকদের কারণেই ক্রিকেট এতদূর এগিয়েছে, দর্শকরাই বাংলাদেশের সাফল্যের রূপকার।
তবে বাস্তবে টাইগার দর্শকদের জন্য কতটুকু ভাবছে বিসিবি। ২৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষম গ্যালারিতে টিকিট কেটে খেলা দেখার সুযোগ পান খুব কম সংখ্যক দর্শক। বেশিরভাগ টিকিটই চলে যায় বিসিবির সৌজন্যে দেশের বিশিষ্ট কর্তা-ব্যক্তিদের হাতে। কালোবাজারিদের কাছ থেকে উচ্চদামে টিকিট নিয়ে প্রবেশ করতে হয় মাঠে। এ নিয়ে দর্শক অসন্তোষ-ভোগান্তির খবর বাংলানিউজে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকবারই।
এবার দর্শকদের অভিযোগ গ্যালারিতে আসন ব্যবস্থার বেহালদশা নিয়ে। বিপিএল শুরুর দ্বিতীয় দিন মিরপুর স্টেডিয়ামের বিভিন্ন গ্যালারি ঘুরে মেলে তাদের এ অভিযোগের সত্যতা।
উত্তর গ্যালারির প্রায় ৫০টি আসন দুমড়ে-মুচড়ে এতটাই বেহাল যে, পা মারিয়ে অন্য আসনে যাওয়াও দুঃসাধ্য। বিপিএল শুরুর উদ্বোধনী দিন (রোববার) মাঠে ঢুকে গ্যালারির আসনগুলোর নাজুক অবস্থা দেখে দাঁড়িয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলা দেখতে হচ্ছিলো তাদের।
স্টেডিয়ামের দুটি ড্রেসিংরুম ঘেসে দাঁড়িয়ে গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড। খুব কাছ থেকে খেলা দেখার সুযোগের কারণে এখানকার টিকিটের দামও আকাশচুম্বি। অথচ সে গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের অবস্থাও রীতিমতো বেহাল। অনেকগুলো আসনই ভাঙা। এমনকি সাংবাদিকদের বসার স্থান প্রেসবক্সের টপফ্লোরে চেয়ার-টেবিলের অধিকাংশ অংশই ভেঙে মেঝেতে পড়ে আছে।
আন্তর্জাতিক সিরিজগুলোতে আগত দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য এটা বিব্রতকর। প্রেসবক্সে বসে ক্রীড়া সাংবাদিকরা সৌম্য-মুস্তাফিজের সাফল্যের গল্প সারাবিশ্বের টাইগারপ্রেমী পাঠকদের সামনে তুলে ধরেন, সেখানকার বেশিরভাগ চেয়ার এতটা পুরোনো যে উঠতে-বসতে কর্কশ আওয়াজ সৃষ্টি করে। পাকিস্থান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আগত দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে যা ছিলো রীতিমতো বিরক্তিকর।
২০০৪ সাল থেকে মিরপুরে অবস্থিত শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে আসে। এরপর ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে গ্যালারিতে দর্শকদের আসনব্যবস্থার সংস্কার করা হয়। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি মাঠের আসন ব্যবস্থার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ২৩ নভেম্বর ২০১৫
এসকে/এমআর