ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

জার্সি নম্বর ২, ৩০, ৪১, ৭৫ ও প্রেরণার গল্প

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
জার্সি নম্বর ২, ৩০, ৪১, ৭৫ ও প্রেরণার গল্প ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম: প্রথমে দেখেশুনে খেলে উইকেটে সেট হওয়া, তারপর অ্যাটাকে যাওয়া। বছর ১৮’র তরুণের ব্যাটিংটা ঠিক যেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সংস্করণ।

সতীর্থরা তাই তাকে আদর করে ডাকেন রিয়াদ নামে। নাম তার সাইফ হাসান। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের ডানহাতি ওপেনার।

ব্যাটিংয়ে যেমন রিয়াদের প্রতিচ্ছবি তেমনি ছেলেটার প্রিয় ব্যাটসম্যানও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সাইফ হতে চান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের মতোই। সে কথা অতীতে অনেকবারই গণমাধ্যমে বলেছেন সাইফ হাসান।

কী? সাইফকে ‘রিয়াদ’ বানাতে আরও কিছু নমুনা লাগবে? এবার তাহলে একবার সাইফের ‘পিঠে’ নজর দিন। আপনি যদি ক্রিকেট সম্পর্কে সামান্য খবরাখবরও রাখেন তাহলে এতক্ষণে নমুনা নিশ্চয় পেয়েই গেছেন। হুম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে মিল রেখে সাইফ হাসানও পরেন ৩০ নম্বর জার্সি।

এ তো গেল ওপেনার ব্যাটসম্যান সাইফ হাসানের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ হওয়ার আশার গল্প। এবার গল্পটা নিয়ে আসা হোক বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে প্রায়সময় বোলিং শুরু করা আব্দুল হালিমের দিকে। লাইন অ্যান্ড ল্যাংথ ঠিক রেখে বোলিং করে নজরে আসা কুষ্টিয়ার এ তরুণ বল নিয়ে দৌঁড়ান ভবিষ্যৎ মাশরাফি হতে।

সম্প্রতি কথা হয় আব্দুল হালিমের সঙ্গে। ২ নম্বর জার্সি পরার রহস্যটা কি? এই প্রশ্ন তুলতেই হালিম বলেন, ‘মাশরাফি ভাই আমার প্রেরণা। মাঠে আক্রমণাত্মক মানসিকতার মাশরাফি বলেন কিংবা মাঠের বাইরের মানুষ মাশরাফি বলেন- দুটোই শ্রদ্ধা জাগানিয়া। চেষ্টা করবো ওনার মতো হতে। তাই মাশরাফি ভাইয়ের মত ২ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামি। এ জার্সিতে যেনো আলাদা আবেগ আছে। ’

‘মাশরাফি ভাই তো আছেনই। আরও একটা বিষয় মিলে গেছে ২ নম্বর জার্সি পরার ক্ষেত্রে। ’-বলেন আব্দুল হালিম।
সেই বিষয়টাও কী বলা যাবে? এমন প্রশ্নে আব্দুল হালিমের বক্তব্য, ‘২ তারিখ আমার জন্মদিন। ’

একবার নেটে ঘুরে পাওয়া গেল আব্দুল হালিমের জন্ম ২ নভেম্বর, ১৯৯৮।

আব্দুর রাজ্জাকের কথা মনে পড়ে? বাঁহাতি স্পিনার। যাকে ছাড়া একটা সময় বাংলাদেশের ওয়ানডে একাদশ চিন্তাও করা যেত না। আরাফাত সানি, তাইজুলদের উত্থানে জাতীয় দলে একপ্রকার নাই হয়ে গেছেন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক। তবে একজনের মনে ঠিকই আছেন তিনি। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের বাঁহাতি স্পিনার আরিফুল ইসলাম জনির আদর্শ আবদুর রাজ্জাক। চলমান বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সুযোগ পাননি। সঞ্জিত নিষিদ্ধ হওয়ার পর একাদশের নিয়মিত সদস্য জনি। কত নম্বর জার্সি পরেন তা তো আর বলতে হচ্ছে না। আবদুর রাজ্জাকের চির পুরাতন ৪১ নম্বরই জার্সিই যুব দলে এখন আরিফুল ইসলাম জনির গায়ে।

ব্যাটিংটা করেন বাঁহাতি। বোলিংয়ে একটু পরিবর্তন। পেস তো বটেই, সঙ্গে ডানহাতিও। দু’টোতেই দলের অন্যতম ভরসা। তবুও কিছুটা পরিবর্তন থাকায় তাকে পুরোটা সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মিলানো যাচ্ছে না। কিন্তু সেসব পরের কথা। বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিন হতে চান সাকিব আল হাসান। বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডারের মত ৭৫ নম্বর জার্সি পরেই ব্যাটে বলে পারফরম্যান্স করেন সাইফুদ্দিন।

স্বপ্নটাকে মনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জার্সির মাধ্যমে নিজেদের আইডলদের প্রতি ভালবাসা-শ্রদ্ধা প্রকাশ করা-এ চার তরুণের গল্পতো শোনা গেল। শুধু জার্সিতে নয় মাঠেও যদি তারা মাশরাফি-সাকিব হতে পারেন শেষমেষ লাভটাতো বাংলাদেশ ক্রিকেটেরই।  

একটা সময় বাংলাদেশের কোন উদীয়মান ক্রিকেটারের কাছে কার মত হতে চান বললেই দেখিয়ে দিতেন বাইরের দেশের কোন ক্রিকেট কিংবদন্তীকে। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। ক্রিকেট কিংবদন্তী তৈরি হয়ে গেছে বাংলাদেশেও। এখন যুবাদের কার মত হতে চান বললেই ঝটপট কেউ দেখিয়ে দেন মাশরাফিকে, কেউ বা সাকিব আল হাসান। এ যেন ক্রিকেটে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সত্যিকার গল্পই...।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
টিএইচ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।