ঢাকা: সম্প্রতি তিন দিনের ব্যবধানে বিশ্ব ক্রিকেট দেখেছে ব্যাটসম্যানদের তাণ্ডব। দেখেছে সর্বোচ্চ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, দেখেছে ওয়ানডেতে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙা ইনিংস।
ভারতের ক্রিকেট তারকা যুবরাজ সিংয়ের মতে, টি-টোয়েন্টির মারদাঙ্গা ফরমেটে খেলা ব্যাটসম্যানরা ওয়ানডে ক্রিকেটে এতোটাই বেশি দাপট দেখাচ্ছেন যে, খুব শিগগিরই ৫০ ওভারের ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের টার্গেট থাকবে সাড়ে চারশো থেকে ৪৭০ রান তোলার। দ্বিতীয় ইনিংসে নামা দলের ব্যাটসম্যানদেরও টার্গেট থাকবে তা চেজ করে ম্যাচ জেতার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ভারতের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মোট রান হয়েছে ৪৮৯, যেকোনো টি-টোয়েন্টিতে তা সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ। এর আগে ২০১০ সালে আইপিএলের আসরে চেন্নাই সুপার কিংস আর রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যকার ম্যাচে রান হয়েছিল ৪৬৯। এছাড়া, এই ম্যাচে সেঞ্চুরি হয়েছে দুটি, উইকেট পড়েছে ১০টি আর জয়ের ব্যবধান ছিল রানের হিসেবে ন্যুনতম।
আমেরিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৪৫ রান সংগ্রহ করে। ৬ উইকেট হারিয়ে তোলা তাদের এই রান টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। এর আগে ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ২৬০ রান তুলেছিল কেনিয়ার বিপক্ষে। আর ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে করেছিল ২৪৮ রান।
২৪৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত জয়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে ব্যর্থ হয়। নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে টিম ইন্ডিয়া তোলে ২৪৪ রান।
এদিকে, ক্রিকেটের ইতিহাসে ৩৭৭৩ তম ওয়ানডেতে নটিংহামে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে স্বাগতিক ইংল্যান্ড রেকর্ড ভেঙে দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস দাঁড় করায়।
২০০৬ সালের ০৪ জুলাই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৪৪৩ রান তুলেছিল এশিয়ার পরাশক্তি শ্রীলঙ্কা। ২৩৯০ তম ওয়ানডেতে লঙ্কানরা ৯ উইকেট হারিয়ে এই দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করায়। এতোদিন সেটিই ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস রেকর্ড।
গত মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেট হারিয়ে সেই রেকর্ড ভেঙে ৪৪৪ রান তোলে ইংল্যান্ড।
এর আগে ১৭ বার ৪০০ রানের ইনিংস দেখেছে ওয়ানডে ফরমেট। সর্বোচ্চ ছয়বার ৪০০ রানের ইনিংস খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচবার ৪০০ রানের কোটা পার করেছে ভারত। শ্রীলঙ্কা দুইবার, অস্ট্রেলিয়া দুইবার দলীয় ৪০০ রানের কোটা পার করেছিল। ইংলিশদের এই ইনিংস শেষে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ালো দুইবারে। একবার দলীয় ৪০০ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড।
ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং এ প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জানান, ‘ওয়ানডেতে নির্দিষ্ট সীমানায় ফিল্ডারদের রাখায় বোলারদের জন্য বল করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ নিয়মে ইংলিশরা ৪৪৪ রান সংগ্রহ করেছে। এটা সত্যিই অনেক বড় স্কোর। আগামীতে ব্যাটসম্যানদের টার্গেট থাকবে ৪৫০ থেকে ৪৭০ রান তোলার। নতুন বল নেওয়ার যে নিয়মটি আছে, তাতেও বোলাররা খুব একটা সুবিধা আদায় করতে পারছে না। ’
তিনি আরও জানান, ‘দক্ষ বোলাররাও ফিল্ডার সাজানোর নিয়ম আর দু’বার নতুন বল পাওয়ার নিয়মের জালে আটকা পড়ছে। ইংল্যান্ডের ম্যাচে দেখা গেছে নতুন বলের ডেলিভারিগুলো খুব সহজেই ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে আসছে। সরাসরি শট নেওয়ায় বল পুরোনো হয়ে যাচ্ছে আর বোলাররা তাদের সুইং গুলো সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছিল না। এই নিয়মে আগামীতে বিগ স্কোরিংয়ের ম্যাচ ঘটতেই থাকবে। ’
যুবরাজ আরও জানান, টি-টোয়েন্টি ফরমেটে ব্যাটসম্যানরা ২৪০-২৫০ রান চেজ করতে ঘাবড়ে যাচ্ছে না। তারা যেভাবে বোলারদের উপর চড়াও হয়, তাতে ওয়ানডেতে ৪০০ রান উঠা কঠিন কিছু নয়। অথচ আগে ওয়ানডেতে ৩০০ রানকেই যথেষ্ট বলে ধরা হতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৬
এমআরপি