ঢাকা: ১২ বছরের ঘরোয়া ক্রিকেট ক্যারিয়ার, অতঃপর জাতীয় দলে সুযোগ। দীর্ঘ সংগ্রামের পথে ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেক।
লেন্থ ঠিক রেখে স্টাম্প টু স্টাম্প বোলিং, অপর প্রান্তে আরেক বাঁহাতি অর্থোডক্স সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণি-এ দুই বোলারের রসায়নে ছোট পরিসরের ক্রিকেটে বেশ আস্থাশীল থেকেছে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ। তবে এ বছরের মার্চে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে সানির উপর প্রশ্নবিদ্ধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ ও পরে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় সংগ্রামী ক্রিকেট ক্যারিয়ারই শেষ হতে যাচ্ছিলো।
একই ঘটনা ঘটে টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদের সঙ্গেও। এখানেই পার্থক্যটা টের পান সানি। আবার বোলিং পরীক্ষা দিয়ে ফেরার ব্যাপারে তাসকিনকে নিয়ে সবাই যতটা ইতিবাচক ছিলেন, আরাফাত সানির ক্ষেত্রে অতটা নয়। অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন তাসকিন ফিরে পাবেন বৈধতা; সানি নয়। এমন ধারণা থেকেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে রাখা হয়নি তাকে।
তবে এ ধারণাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তন করে কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন এ বোলার; পুরস্কারও হাতে পেলেন নতুন করে বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষার ১৪ দিনের মাথায়। তাসকিন-সানি দু’জনই ফিরে পেয়েছেন বোলিং অ্যাকশনের বৈধতা।
এমন খবরে আনন্দের অন্ত নেই সানির, ‘অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। খুব টেনশনে ছিলাম। বড় একটা ঝামেলা থেকে বাঁচলাম। এখন খুব শান্তি লাগছে। ’
আগামীকাল থেকে তাসকিন আহমেদ আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন; সানির চোখ এখন জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল)। আগামী রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে ক্রিকেটের দৈর্ঘ্য ফরম্যাটের আসর এনসিএল।
চারদিনের ম্যাচে লম্বা সময় ধরে বোলিং করে নতুন অ্যাকশনে কিভাবে আরও কার্যকরী হওয়া যায়-এ ভাবনায় সানি, ‘আপাতত ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে ভাবছি না। ২৫ তারিখ থেকে জাতীয় লিগ, সেখানেই ফোকাস করছি। পরেরটা পরে চিন্তা করা যাবে। জাতীয় লিগে যেহেতু ওভারের বাইন্ডিংস নেই, সেহেতু এখানে নতুন অ্যাকশনে কিভাবে আরও কার্যকরী হওয়া যায় সেটা নিয়েই চিন্তা করছি। ’
বোলিং পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সপ্তাহ দুয়েক আগেই বাবা হারান সানি। জ্বর নিয়েই পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। ৮ সেপ্টেম্বর ব্রিসবেনের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমির ল্যাবে হয় বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা।
পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে সানির প্রস্তুতির মাঝে ছিল আরেক সংগ্রাম। পণ করেন অ্যাকশন না শুধরে খেলবেন না ঘরোয়া ক্রিকেটে। এ জন্য গেল প্রিমিয়ার লিগের প্রথম দিকের বেশ কয়েকটি ম্যাচেও দেখা যায়নি সানিকে। বাংলাদেশের সাবেক স্পিন কোচ রুয়ান কালপাগের মুঠোফোন ও ভিডিওবার্তার পরামর্শ মেনে কাজ করে গেছেন নীরবে-নিভৃতে। সানি যেন যুদ্ধজয়ী এক বীর, সংগ্রামী ক্রিকেটারের অনন্য এক প্রতীক।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
এসকে/এমআরপি