ঢাকা: বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজের প্রত্যাশা করছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। তিনদিন বাদেই প্রথম ওয়ানডে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ মাঠে গড়াবে।
‘বাংলাদেশ থেকে সাবধান’ এমন শিরোনামে একঝাঁক উঠতি তারকাকে নিয়ে দল হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি সমীহর দিকটিই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মাশরাফিদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ভূয়সী প্রশংসাই করা হয়। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ওডিআই সিরিজ হেরে যাওয়া টাইগাররা তিন ফরমেটে ব্যাক ক্যাপসদের বিপক্ষে কেমন করবে তা নিয়ে সমর্থকদের ব্যাপক আগ্রহের দিকটি জানানো হয়েছে।
আসন্ন সিরিজে বাংলাদেশের জার্সিতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন এমন বিশেষ কয়েকজনের দিকে স্পটলাইট রাখছে নিউজিল্যান্ডের অফিসিয়াল সাইটটি।
শুরুতেই উঠে আসে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন সেনসেশন মেহেদি হাসান মিরাজের নাম। ১৯ বছর বয়সী অলরাউন্ডার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট সিরিজেই তারকাখ্যাতির জানান দেন। দুই ম্যাচে ১৯টি উইকেট নিয়ে হন সিরিজ সেরা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্টের পাশাপাশি অন্য দুই ফরমেটে সুযোগ পেলে মিরাজ দলকে কী এনে দিতে পারেন তা নিয়ে নিউজিল্যান্ড ব্যাপক আগ্রহী।
মিরাজের পর বিশ্ব ক্রিকেটের বোলিং বিস্ময় মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ভীতি প্রকাশ পায়। ভারতে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বের ম্যাচে কিউইদের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়েছিলেন ‘কাটার মাস্টার’। হায়দ্রাবাদকে আইপিএলের শিরোপা এনে দিতে তার ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতোই। টুর্নামেন্টের সেরা বোলার মোস্তাফিজের উপস্থিতিতে বেশিরভাগ ম্যাচেই একাদশের বাইরে থেকে অলস সময় পার করেছিলেন কিউই পেস তারকা ট্রেন্ট বোল্ট। মোস্তাফিজের দুর্দান্ত সব বোলিং বৈচিত্র্য নিশ্চিতভাবেই যে নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের ভোগাবে তা নিয়ে উদ্বেগই প্রকাশ পায়।
টেস্টে মুমিনুল হককে নিয়েও চিন্তিত স্বাগতিক শিবির। যার ব্যাটিং গড় ৫১.৬৬। সাদা পোশাকে তার নামের পাশে চারটি সেঞ্চুরি। দু’টিই আসে ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের সবশেষ বাংলাদেশ সফরে। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে মুমিনুল কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এ পরিসংখ্যান দিয়েই তা বোঝানো হয়েছে।
সবশেষ বাংলাদেশের ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন সাকিব আল হাসান। এ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ধারাবাহিকভাবে তিন ফরমেটেই সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ভিজিটরদের স্কোয়াডে সাকিবের ওপর বিশেষ দৃষ্টি রাখছে স্বাগতিকরা। বড় ম্যাচে তার পারফরম্যান্স কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়ের লক্ষ্যে সাকিবই বাংলাদেশের বড় ভরসা হয়ে উঠতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়।
সবশেষ ২০১০ সালে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল টিম বাংলাদেশ। সেবার খালি হাতেই দেশে ফিরতে হয়। কিন্তু, সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশ দল এখন বেশ পরিণত। যেকোনো শক্তশালী দলই এখন সমীহর চোখে দেখে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এবারের সিরিজটি যে উপভোগ্য হবে তা নিয়ে কারোরই দ্বিমত পোষণ করার সুযোগ নেই।
এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১১টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। আটটিই জিতে নেয় কিউইরা। বাকি তিন ম্যাচ ড্র। ওয়ানডেতে ২৫ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে আট ম্যাচে জয় (১৭টিতে হার) নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টিতে চার ম্যাচেই শেষ হাসি হাসে ব্ল্যাক ক্যাপসরা।
এদিকে, মূল সিরিজ শুরুর আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে (২২ ডিসেম্বর) বৃষ্টি আইনে তিন উইকেটের জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। এ ম্যাচ দিয়েই ইনজুরি কাটিয়ে লম্বা বিরতির পর বোলিংয়ে ফেরেন মোস্তাফিজ।
বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের সূচি:
২৬ ডিসেম্বর: প্রথম ওয়ানডে, ক্রাইস্টচার্চ
২৯ ডিসেম্বর: দ্বিতীয় ওয়ানডে, নেলসন
৩১ ডিসেম্বর: তৃতীয় ওয়ানডে, নেলসন
৩ জানুয়ারী: প্রথম টি-২০, নেপিয়ার
৬ জানুয়ারী: দ্বিতীয় টি-২০, মাউন্ট মাউনগানুই
৮ জানুয়ারী: তৃতীয় টি-২০, মাউন্ট মাউনগানুই
১২-১৬ জানুয়ারী: প্রথম টেস্ট, ওয়েলিংটন
২০-২৪ জানুয়ারী: দ্বিতীয় টেস্ট, ক্রাইস্টচার্চ
বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী সবগুলো ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ ভোর ৪টায় শুরু হবে। প্রথম টি-টোয়েন্টি দুপুর ১২টায়। পরের দুই ম্যাচ মাঠে গড়াবে সকাল ৮টায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬
এমআরএম