ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

দ্রুত উইকেট ফেলতে মরিয়া টাইগাররা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৭
দ্রুত উইকেট ফেলতে মরিয়া টাইগাররা ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩০৫ রানের জবাবে লিড নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচে ফিরতে হলে লাগাম টানার বিকল্প নেই টাইগারদের। আরও পাঁচ উইকেট ফেলতে হবে। সবশেষ হিল্টন কার্টরাইটকে (১৮) স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে উইকেটের খাতায় নাম লেখান মেহেদি হাসান মিরাজ।

এ রিপোর্ট লেখা অবধি অজিদের সংগ্রহ ১০৫ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ৩৪১। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩৭ ও ম্যাথু ওয়েড ৮ রানে ব্যাট করছেন।

দলীয় ২৯৮ রানের মাথায় সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড ওয়ার্নারের (১২৩) উইকেট ‍তুলে নেন ‘বার্থডে বয়’ মোস্তাফিজুর রহমান। ২২ বছরে পা রাখা ‘কাটার মাস্টারের’ এটি দ্বিতীয় শিকার। লেগ গালিতে প্রথম চান্সে ক্যাচটি তালুবন্দি করতে না পারলেও হাতছাড়া করেননি ইমরুল কায়েস। ওয়ার্নার-ম্যাক্সওয়েল জুটিতে আসে ৪৮।  

দু’বার জীবন পেয়ে ইনিংসটিকে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে রূপ দেন ওয়ার্নার। এটি তার ২০তম টেস্ট সেঞ্চুরি। ঢাকা টেস্টে দল হারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে শতক হাঁকিয়েছিলেন। ওয়ার্নারের হান্ড্রেড পূরণে ননস্ট্রাইক থেকে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে নিজের উইকেটটা বিলিয়েছেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব (৮২)।

দু’জনের জুটি থামে ১৫২ রানে। স্বস্তি ফেরে বাংলাদেশ শিবিরে। নাসির হোসেনের বলে হ্যান্ডসকম্বকে রানআউট করে মূল্যবান ব্রেকথ্রু এনে দেন সাকিব আল হাসান। আড়াইশ’ রানে অজিদের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে।

এর আগে ভারী বৃষ্টির কারণে তিন ঘণ্টারও অধিক সময় শুরু হয় চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। চালকের আসনে থাকা অজিদের যত দ্রুত সম্ভব অলআউট করে ম্যাচে ফেরার লক্ষ্যে চোখ রাখছেন সাকিব-মিরাজ-তাইজুলরা। দিনের দশম ওভারের মাথায় (৭৪তম) ভাঙে পথের কাটা হয়ে ওঠা ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্ব পার্টনারশিপ।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। নতুন করে আর বৃষ্টি না হলে কমপক্ষে ৬৭ ওভারের খেলা হবে। দুই উইকেটে ২২৫ রান (৬৪ ওভার) নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল সিরিজে সমতায় ফিরতে মরিয়া সফরকারীরা। ১২৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ওয়ার্নার ৮৮ ও হ্যান্ডসকম্ব ৬৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।

সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না পারার মাশুলই গুনতে হয়েছে টাইগারদের। দু’বার (৫২ ও ৭৩ রানে) আউটের হাত থেকে বেঁচে যান ওয়ার্নার। তাইজুল ইসলামের বলে লেগশর্টে ক্যাচ ফেলে দেন মুমিনুল হক। পরে আবারো ভাগ্যের সহায়তা পান অজি ওপেনার। মেহেদি হাসান মিরাজকে এগিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করলেও ‘সহজতম’ স্ট্যাম্পিং মিস করেন মুশফিকুর রহিম। বলের লাইনটাই বুঝে উঠতে পারেননি। খানিকটা নিচু হয়ে আসা ডেলিভারি তার কিপিং প্যাডে গিয়ে লাগে।

শুরুটা ভালো হয়েছিল। ঢাকা টেস্টে উইকেটশূন্য মোস্তাফিজুর রহমান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরান ম্যাট রেনশকে (৪)। এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ উপহার দেন মুশফিক। কিন্তু দলীয় ৫ রানে উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে জুটি গড়ে দলকে পথ দেখান ওয়ার্নার ও অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। স্মিথকে (৫৮) বোল্ড করে দু’জনের ৯৩ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে মূল্যবান ব্রেকথ্রু এনে দেন তাইজুল।

স্মিথ ফিরলেও অজিদের ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হানতে পারেননি সাকিব-মিরাজরা। মুমিনুলের ক্যাচ মিস ও মুশফিকের স্ট্যাম্পিং ব্যর্থতা দ্বিতীয় দিনে টার্নিং পয়েন্ট হয়ে থাকে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অজিদের হাতে।

এর আগে সবকটি উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৩০৫ রান তোলে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শুরতে মুশফিক (৬৮) দ্রুত আউট না হলে প্রথম ইনিংসের সংগ্রহটা আরও হতে পারতো। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন সাব্বির রহমান। শেষদিকে নাসির হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ৪৫। সৌম্য সরকার ৩৩, মুমিনুল ৩১ ও সাকিব ২৪ রান করেন। ঢাকা টেস্টের দুই ইনিংসেই অর্ধশতক হাঁকানো তামিম ইকবাল হোম গ্রাউন্ডে ৯ রানে আউট হয়ে যান।

একাই সাতটি উইকেট দখল করেন অফস্পিনার নাথান লায়ন। বাকি দু’টি নেন আরেক স্পিনার স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার। রানআউট হন মিরাজ (১১)।

অজিদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ স্বাগতিক শিবির। ঢাকায় অনুষ্ঠিত মিরপুর টেস্টে ২০ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে লিড নেয় টাইগাররা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আরেকটি ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখছে মুশফিকের দল। সেই লক্ষ্যে তৃতীয় দিনে ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।