স্টিভ ও’কিফ ৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। তার সঙ্গী নাথান লায়ন।
জন্মদিনে জ্বলে ওঠেন মোস্তাফিজুর রহমান। মেহেদি হাসান মিরাজের সমান তিনটি উইকেট লাভ করেন ২২-এ পা রাখা ‘কাটার মাস্টার’। একটি করে নেন তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ভারী বৃষ্টির কারণে প্রথম সেশনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। আগের দিনের ২ উইকেটে ২২৫ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন ডেভিড ওয়ার্নার ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব। হ্যান্ডসকম্বকে (৮২) রানআউট করে দুজনের জুটি (১৫২) ভাঙেন সাকিব আল হাসান। আড়াইশ’ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে।
দু’বার জীবন পেয়ে ইনিংসটিকে ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরিতে রূপ দেন ওয়ার্নার (১২৩)। দলীয় ২৯৮ রানের মাথায় অজি ওপেনারকে ফিরিয়ে স্বস্তি এনে দেন মোস্তাফিজ। লেগ গালিতে প্রথম চান্সে ক্যাচটি তালুবন্দি করতে না পারলেও হাতছাড়া করেননি ইমরুল কায়েস।
হিল্টন কার্টরাইটকে (১৮) স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে উইকেটের খাতায় নাম লেখান মিরাজ। ম্যাথু ওয়েডকে (৮) এলবিডব্লু করে নিজের তৃতীয় শিকার বানিয়েছেন ‘বার্থডে বয়’ মোস্তাফিজ। রিভিউ নিলেও তা বিফলে যায়। ৩৪২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় অজিরা।
৪ রান যোগ হতেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (৩৮) মাঠছাড়া করেন মিরাজ। কিছুটা সময় নিয়ে চেক করে নিশ্চিত হয়ে আউটের সিগন্যাল দেন আম্পায়ার। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাট-প্যাড হয়েই বল যায় মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।
মিরাজের ডেলিভারি ইচ্ছাকৃত প্যাডে লাগিয়ে এলবিডব্লুর শিকার হন প্যাট কামিন্স (৪)। আম্পায়ার আউট না দিলে বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই রিভিউ নিয়ে সফল হন টাইগার অধিনায়ক। সবশেষ অ্যাশটন অ্যাগারকে (২২) বোল্ড করে নবম উইকেটের পতন ঘটান সাকিব। স্বস্তিই পান সৌম্য সরকার। একই ওভারে (১১১তম) যে স্লিপে সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন।
সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে দ্বিতীয় দিনটিও হতে পারতো বাংলাদেশের। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটাও চলে আসতো অনায়াসেই! দু’বার (৫২ ও ৭৩ রানে) আউটের হাত থেকে বেঁচে যান ওয়ার্নার। তাইজুলের বলে লেগশর্টে ক্যাচ ফেলে দেন মুমিনুল হক। পরে আবারো ভাগ্যের সহায়তা পান অজি ওপেনার। মিরাজকে এগিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করলেও ‘সহজতম’ স্ট্যাম্পিং মিস করেন মুশফিক। বলের লাইনটাই বুঝে উঠতে পারেননি। খানিকটা নিচু হয়ে আসা ডেলিভারি তার কিপিং প্যাডে গিয়ে লাগে।
শুরুটা ভালো হয়েছিল। ঢাকা টেস্টে উইকেটশূন্য মোস্তাফিজ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরান ম্যাট রেনশকে (৪)। এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ উপহার দেন মুশফিক। কিন্তু দলীয় ৫ রানে উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে জুটি গড়ে দলকে পথ দেখান ওয়ার্নার ও অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। স্মিথকে (৫৮) বোল্ড করে দু’জনের ৯৩ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে মূল্যবান ব্রেকথ্রু এনে দেন তাইজুল।
স্মিথ ফিরলেও টার্নিং পয়েন্ট হয়ে থাকে মুমিনুলের ক্যাচ মিস ও মুশফিকের স্ট্যাম্পিং ব্যর্থতা। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অজিদের হাতে। যা এখন আর সেই অর্থে নেই। ঘুরে দাঁড়ানো পারফরম্যান্সে তৃতীয় দিনটি যে বাংলাদেশ নিজেদের করে নিয়েছে।
এর আগে সবকটি উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৩০৫ রান তোলে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শুরতে মুশফিক (৬৮) দ্রুত আউট না হলে প্রথম ইনিংসের সংগ্রহটা আরও হতে পারতো। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন সাব্বির রহমান। শেষদিকে নাসির হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ৪৫। সৌম্য সরকার ৩৩, মুমিনুল ৩১ ও সাকিব ২৪ রান করেন। ঢাকা টেস্টের দুই ইনিংসেই অর্ধশতক হাঁকানো তামিম ইকবাল হোম গ্রাউন্ডে ৯ রানে আউট হয়ে যান।
একাই সাতটি উইকেট দখল করেন অফস্পিনার নাথান লায়ন। বাকি দু’টি নেন আরেক স্পিনার স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার। রানআউট হন মিরাজ (১১)।
অজিদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ স্বাগতিক শিবির। ঢাকায় অনুষ্ঠিত মিরপুর টেস্টে ২০ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে টাইগাররা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আরেকটি ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখছে মুশফিকের দল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
এমআরএম