ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাকিবকে ঝুঁকি নিতে নিষেধ করেছিলেন পাপন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৮
সাকিবকে ঝুঁকি নিতে নিষেধ করেছিলেন পাপন ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আঙুলে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন সাকিব-ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: চোটগ্রস্ত আঙুল নিয়ে এশিয়া কাপে অংশগ্রহন করতে সাকিব আল হাসানকে নিষেধ করেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কিন্তু তারপরেও তিনি খেলেছেন। সেটা হয়তো দেশের কথা এবং দলের কথা বিবেচেনা করেই। তবে পাপনের কথায় এটা নিশ্চিত সাকিব আল হাসানকে চোটগ্রস্ত আঙুল নিয়ে কোন ঝুঁকিই তিনি নিতে বলেননি।

মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে পাপন সংবাদ মাধ্যমকে একথা বলেন।

পাপন বলেন, ‘মক্কা ও মদিনায় আমার সঙ্গে দেখা করল।

আমি বললাম, তুমি এরকম রিস্ক নিও না, তুমি একজন বেস্ট ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করো। তারপর তুমি সিদ্ধান্ত নাও। ও আমাকে জিজ্ঞাসা করল এখন করব না পরে করব? আমি বললাম সেটা তো তোমার সিদ্ধান্ত। আবার মদিনায়ও একই কথা বললাম। শেষে আমি তাকে বললাম যে তুমি এত বড় রিস্ক নিও না। ডাক্তার দেখাও। তো ও আমাকে বলল যে, আমাকে ফিজিও বলে দিছে কোনো অসুবিধা নাই। আমি জানতে চাইলাম খেললে এটা আরও খারাপ হতে পারে কি না? ও বলছে না। তখনও আমি ওকে বলছি ভালো একজন ডাক্তার দেখাও। ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে তুমি সিদ্ধান্ত নাও। এটাই ওর সঙ্গে আমার শেষ যোগাযোগ। ’পাপন-ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম‘ও যদি এশিয়া কাপ চলা অবস্থায় আঘাত পেতো তাহলেও কথা ছিলো। ও তো খেলতে গিয়ে কোনো ব্যথা পায়নি। তাহলে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়ে হঠাৎ এরকম হলো কিভাবে? এটা আমার কাছে একটা বিরাট প্রশ্ন। ও আমাকে যেটা বলল যে, ডাক্তার বলেছে তিন মাস রেস্ট। তারপর আমি খেলতে পারব। আর অপারেশনের কথা জিজ্ঞাসা করলাম, আমাকে তো অনেকেই বলছে অপেরাশন করে কোনো লাভ নেই। ও বলল, হ্যাঁ, আমাকেও তাই বলছে। হয়তো অপারেশন লাগবে না। প্রথমবার থেকে যা শুনে আসছি যে অপেরাশন করে কোনো লাভ নেই। লাগবে না। এখনও কিন্তু ওই জায়গায়ই আছে। এখন ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আসছে। এসব সাকিবের কাছ থেকে শোনা। ’-যোগ করেন পাপন।

হজেই প্রথম নয়। আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল দেশে ফেরার পর গেল ১৪ আগস্ট  এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাকিব ইস্যুতে বলেছিলেন, 'হজে যাওয়ার আগে সে আমাকে ফোন করে জানতে চেয়েছিল আমি কী করবো? আমি বলেছি তোমার যদি হাতে ব্যথা থাকে এবং তুমি যদি মনে করো এটা নিয়ে খেলা সম্ভব না তুমি এখন অপারেশন করে ফেল, কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু যদি মনে করো খেলা সম্ভব তাহলে এশিয়া কাপ শেষে করলে দলের জন্য ভাল হয়। সিদ্ধান্ত তোমার। ’

সেই মোতাবেক আঙুলের অস্ত্রোপচার না করিয়ে হয়তো দলের কথা বিবেচনাপূর্বকই এশিয়া কাপে অংশ নিতে গিয়েছিলেন টাইগাপরদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। টুর্নামেন্টে তিনটি ম্যাচ খেলার পর আঙুলে তীব্র ব্যথা অনুভব করলে টুর্নামেন্ট শেষ না করে ২৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে পরদিনই রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসক জানান, তার ক্ষতে ইনফেকশন হয়ে পুঁজ জমে গিয়েছে এবং তৎক্ষণাৎ প্রায় ৬০-৭০ মিলিগ্রাম পুঁজ বের করা হয়। পাশাপাশি তারা এও জানিয়ে দেন তার আঙুল কখনোই পুরোপুরি সেরে উঠবে না এবং আগামী ৩ মাস তিনি কোনো ধরনের ক্রিকেট খেলতে পারবেন না।

তিনদিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে পরদিনই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গত শুক্রবার (৫ অক্টোবর) রাতে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তার আঙুল দেখে সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ‘৬ মাসের আগে তার আঙ্গুলে অপারেশন করা যাবে না। তবে ইনফেকশন শুকিয়ে গেলে, ব্যথা কমলে, যদি ফিট হয় হয়তো তিন মাসের মধ্যে তাহলে সে খেলতে পারবেন। ’

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে তিন জাতির  ক্রি‌কে‌ট টুর্নামেন্টের ফাইনালে ফিল্ডিংয়ের সময় বাঁহাতের কনিষ্ঠ আঙুলে গুরুতর চোট পান সাকিব। সেই চোট নিয়েই গিয়েছিলেন সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ০৯ অক্টোবর, ২০১৮
এইচএল/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।