যে গ্রিন গ্যালারি স্টেডিয়ামটির শোভা বাড়িয়েছে। সেই গ্রিন গ্যালারি এখন বিবর্ণ।
তাছাড়া টিলার ভাজে খাজ কাটা আস্তরণ। খেলা উপভোগে গ্যালারি আকারে রূপ দেওয়া হয় টিলার। লাগানো হয় সবুজ ঘাস। যত্মের অভাবে ঘাস নেই সেখানে। এ কারণে দর্শকরাও বসতে চাননা গ্রিন গ্যালারিতে।
এছাড়া খোলা আকাশের নীচে প্রখর রোদের তাপ গায়ে লাগিয়ে খেলার দেখার শখ ক’জনার আছে? তাই সিলেটে অভিষিক্ত টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে দর্শকশূন্য গ্রিন গ্যালারি।
শনিবার (০৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের ম্যাচ শুরু হয়। সকালের মিষ্টি রোদে দু’চার জন দর্শক রোদ পোহানোর জন্য কয়েকজন দর্শক বসে খেলা দেখলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারাও অন্যত্র ছায়ার আশ্রয় খোঁজেন।
গ্রিন গ্যালারিতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরাও রোদ থেকে বাঁচতে আশ্রয় নেন টিলার উপরে থাকা বাঁশ ঝোপের ছায়াতলে। মূলত; পশ্চিম দিগন্তে সূর্য অস্তমিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ওখানে বসা দর্শকরা কেবল রোদে পুড়ে খেলা দেখতে হয়। যে কারণে টিকিট কেটে ঢুকে দর্শকরাও ত্যাক্ত বিরক্ত।
টি-টোয়েন্টি কিংবা ওয়ানডে ফরম্যাটের খেলা হলেও গ্রিন গ্যালারিতে অবস্থান করা দর্শকদের ধর্য্যের বাধ ভেঙে যায়। আর তা যদি হয় টেস্ট ম্যাচ তবেতো কথাই নেই।
শনিবার ম্যাচের প্রথম দিনে গ্রিন গ্যালারিতে কিছু দর্শক দেখা গেলেও দ্বিতীয় দিনের খেলায় দর্শকশূন্য ছিল এই টিলাটি।
খেলা দেখতে আসা দর্শকদের অনেকে বলেন, যে গ্রিন গ্যালারির কারণে নান্দনিক এই স্টেডিয়াম। এই গ্রিন গ্যালারিকে আরো দর্শনীয় করতে এবং দর্শকদের সুবিধার্থে ছায়াবৃক্ষ লাগানো যেতে পারতো।
সিলেটের জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ী ক্রিকেটপ্রেমী ফরিদ উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য স্টেডিয়ামের নিজস্বতা তৈরি করেছে। সেই সৌন্দর্য যেখানে অনুপস্থিত, সেটাকে এখন আর গ্রিন গ্যালারি বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, গ্রিন গ্যালারি নামক টিলাটি এখন বিবর্ণ, ফ্যাকাসে। ঘাস নেই, অনেকটা লাল মাটিতে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে এটাকে নামের সঙ্গে মিল রেখে গ্রিন রাখতে পারতেন। যথেষ্ট আন্তরিকতার অভাব না থাকলে গ্রিন গ্যালারির এমন পরিণতি হতো না।
আরিফ রহমান নামে নগরের জালালাবাদের বাসিন্দা বলেন, ছায়াবৃক্ষ লাগানো হলে নির্মল পরিবেশে বসে দর্শকরা খেলা উপভোগ করতে পারতেন। তাছাড়া বসার জন্য ঘাসই নেই গ্রিন গ্যালারিতে।
আগ্রহ নিয়ে গ্রিন গ্যালারির টিকিট কেটে ১৪ নং ফটক দিয়ে প্রবেশ করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাহিয়ান ও রাজিব। কিন্তু গ্যালারিতে বসে খেলা উপভোগ করার শখ বিলীন হয়ে যায় প্রখর রোদের তাপে। ছায়া বৃক্ষ না থাকায় মাঠের প্রবেশদ্বারে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও পুলিশী বাধার কারণে আরো কয়েক জনের সঙ্গে আশ্রয় নেন টিলার পাদদেশে একটি গাছ তলায়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বাংলানিউজকে বলেন, সিলেটের মাঠে গ্রিন গ্যালারিটি অত্যান্ত সুন্দর। এখানে বসা দর্শকরা রোদের মধ্যেই খেলা দেখতে হবে। অবশ্য এই স্থানে কিছু চা গাছ লাগানো যেতে পারে।
এ ব্যাপারে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দ্বীপ দাস সুজক বাংলানিউজকে বলেন, এখন শুস্ক মৌসুম, তাই ‘সবুজ’ নেই। আর দর্শকরা নীচে বসছে না। দর্শকরা টিলার উপরে বসছেন।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে রিনোভেশন করার উদ্যোগ হিসেবে বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। যারা ডিজাইন করেছেন, তাদের দিয়ে টিলার উচ্চতা কমিয়ে আনা হবে যাতে দর্শকরা বসতে পারেন। এরইমধ্যে পেছনে গাছ লাগিয়েছি। এগুলো বড় হলে ছায়া দেবে।
এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল এর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘন্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৮
এনইউ/এমএমএস