চাকাভার ফ্লিক থেকে বল শর্ট লেগে থাকা মুমিনুলের হাতে জমা হলে আউটের আবেদন করেন তাইজুল। কিন্তু আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নিতে রেফার নেন।
আজ মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনের শুরুতে ব্র্যান্ডন চারি (৫৩) ও ব্র্যান্ডন টেইলরের ব্যাটে চড়ে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। পরে টেইলরকে সঙ্গ দেন পিটার মুর (৮৩)। এই মুরকে আউট করে জুটি ভাঙেন আরিফুল হক। কিছুক্ষণ পর সেঞ্চুরিয়ান টেইলরকে (১১০) বিদায় করে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এক বল পরেই তার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ব্র্যান্ডন মাভুতা।
দিনের শেষ সেশনের একদম শেষ মুহূর্তে ইনিংসে নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়ের ইনিংস ৩০৪ রানেই থামিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে ২১৮ রানের লিড এনে দেন তাইজুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ের টেন্ডাই চাতারা ইনজুরির কারণে মাঠে নামতে না পারায় ১ উইকেট হাতে রেখেই ইনিংস শেষ করতে হয় জিম্বাবুয়েকে।
মাঝে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক জুটি গড়েন টেইলর-মুর। দুজনে ক্রিজে এমনই জাঁকিয়ে বসেন যে মোস্তাফিজ-খালেদ আহমেদের মতো পেসারদের বল অনায়াসে মাঠ ছাড়া করেন। শীর্ষ পেসাররা উইকেট তুলতে না পারায় আরিফুল হকের হাতে বল তুলে দেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। দিনের শেষ পানি বিরতির ঠিক আগে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে মুরকে (৮৩) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন আরিফুল।
তবে মুরের বিদায়েও দমে যাননি টেইলর। তাইজুলের বলে এক্সট্রা কভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯৯০-এ পৌছান তিনি। এরপর ৯৫তম ওভারে মিড উইকেটে শট খেলে ২ রান নিয়ে নিজের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন টেইলর। ১৮৭ বল খেলে ৮ চারে সেঞ্চুরিটির ইনিংসটি সাজিয়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
কিন্তু সেঞ্চুরি পেয়েই মেরে খেলতে শুরু করেন টেইলর। আর তার ফায়দা তুলে নেন অফ স্পিনার মেহেই হাসান মিরাজ। তার বলে সুইপ শট খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগে থাকা তাইজুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন টেইলর। ফলো-অন থেকে ৩৩ রান দূরে থাকা জিম্বাবুয়ের ব্র্যান্ডন মাভুতা ও রেগিস চাকাভা বেশীক্ষণ টিকে থাকতে ব্যর্থ হন। মাভুতাকে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মিরাজ।
কাইলি জারভিস ও চাকাভা জিম্বাবুয়ের ইনিংস তিনশ পার করেন। কিন্তু চাকাভাকে ব্যক্তিগত ১০ রানে শর্ট লেগে ক্যাচ বানিয়ে ৩০৪ রানেই জিম্বাবুয়ের ইনিংসের যতি টেনে দেন তাইজুল।
চলতি টেস্ট সিরিজের টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করে সাকিব আল হাসান ও এনামুল হক জুনিয়রের কীর্তিতে ভাগ বসালেন টাইগার বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। সাদা পোষাকে লাল-সবুজের হয়ে টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া বোলার তারা তিনজনই।
গেল ৩-৬ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট সিরিজের টেস্টের প্রথম ইনিংসে তাইজুল নেন ৬ উইকেট। কম যাননি দ্বিতীয় ইনিংসেও। একে একে ৫ জিম্বাবুইয়ানকে নিজের শিকারে পরিণত করে মোট সংগ্রহটা নিয়ে যান ১১তে। এরপর মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) শের-ই-বাংলায় সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে তাইজুল নেন ৫ উইকেট।
বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা তিন ইনিংসে ৫ ও তার বেশি উইকেট নিয়ে তিন ইনিংসে মোট ১৮টি উইকেট শিকার করেছিলেন এনামুল হক জুনিয়র। এর তিন বছর পর ২০০৮ সালে দক্ষিণ অফ্রিকা সফরে গিয়ে এনামুলের কীর্তিতে ভাগ বসান সাকিব আল হাসান। তিন ইনিংসে নেন ১৬ উইকেট।
এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরি আর মুমিনুল হকের সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৫২২ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে বাংলাদেশ।
সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজ বাঁচাতে হলে এই ম্যাচে টাইগারদের জয়ের কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৮
এমএইচএম