ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

‘ধোনিকে কুড়িয়ে পেয়েছি’-পারভেজ মোশাররফকে গাঙ্গুলি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৮
‘ধোনিকে কুড়িয়ে পেয়েছি’-পারভেজ মোশাররফকে গাঙ্গুলি পারভেজ মোশাররফ-ধোনি-গাঙ্গুলি-ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় দলের হয়ে ২০০৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে এক ওয়ানডে ম্যাচে ১৪৮ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে সবার নজরে চলে আসেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। মাত্র ২৩ বছর বয়সী ভারতের ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ধোনির আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল সবাই।

এক বছর বাদে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে যায় সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। সেবারও নিজের ফর্ম বজায় রাখেন ধোনি।

পাকিস্তানের দেওয়া ২৮৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ধোনির ৪৬ বলে অপরাজিত ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংসের উপর ভর করেই জয় পায় ভারত।

তবে সেই ম্যাচে তার অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের চেয়ে আলোচনার খোরাক জুগিয়েছিল তার লম্বা চুল। এমনকি ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফও ধোনির লম্বা চুলের প্রশংসা করে কাটতে বারণ করেছিলেন। ম্যাচসেরার পুরস্কার ধোনির হাতে তুলে নিয়ে মোশাররফ বলেন, ‘দর্শকদের মাঝে অনেকের প্ল্যাকার্ডে তোমাকে চুল ছাঁটতে বলা হবে, কিন্তু তুমি যদি আমার উপদেশ গ্রহণ করো, চুলের এই স্টাইলেই তোমাকে ভালো দেখায়। '

কলকাতার টালিগঞ্জ ক্লাবে এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ও ব্যাটসম্যান সৌরভ গাঙ্গুলি সেই মুহূর্তের কথা স্মরণ করতে গিয়ে বলেন, পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ ওই ম্যাচের পর তার কাছে জানতে চাইলেন, “এই ছেলেকে কোথায় পেলে?”

জবাবে বেশ মজার ছলে মোশাররফের প্রশ্নের উত্তর দেন, ‘আমি তাকে বললাম, সে (ধোনি) ওয়াগাহ বর্ডারের (পাঞ্জাবের ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত) কাছে হাঁটছিল এবং আমরা তাকে তুলে আনি। '

এদিকে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ধোনির আগ্রাসী ব্যাটিং আর আগের অবস্থানে নেই। টি-টোয়েন্টি দল থেকে তো বাদই পড়েছেন। তবে ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের দলে তাকে রাখা হবে এটা অনেকটাই নিশ্চিত। তবে গাঙ্গুলি মনে করেন, ধোনি এখনো চ্যাম্পিয়ন আর তাকে তার মত করেই খেলতে দেওয়াই উচিত।

‘সে আরেক চ্যাম্পিয়ন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার প্রায় ১২-১৩ বছর পরও তার ক্যারিয়ারটা দারুণ। অন্য সবার মতোই তাকে পারফর্ম করতে হবে। জীবনের সবক্ষেত্রেই যে কাজই করুন না কেন, যে-ই হোন, বয়স যা-ই হোক, যতই অভিজ্ঞতা থাকুক; আপনাকে সেরাটা দিতে হবে। না হলে অন্য কেউ জায়গা নিয়ে নেবে। '

‘ওর জন্য আমার শুভকামনা রইলো, কারণ আমরা চাই চ্যাম্পিয়নরা মাথা উঁচু করেই বিদায় নেবে। আমি এখনো মনে করি সে গ্যালারীতে বল পাঠাতে সক্ষম। সে একজন বিস্ময়কর ক্রিকেটার। '

২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয় ধোনির। তবে অভিষেক ওয়ানডেতে ডাক মারেন তিনি। তবে নিজের খেলায় পরিবর্তন এনে খুব দ্রুতই দলে জায়গা পাকা করে নেন। এরপর ২০০৭ সালে ভারতের ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তার কাঁধে।  

২০০৭ সালেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অভিষেক আসরেই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে শিরোপা এনে দেন ধোনি। অনিল কুম্বলের অবসরের পর টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্বও পান তিনি। ২০১১ সালে ঘরের মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ও তার নেতৃত্বেই আসে।  

২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ফরম্যাটেই ভারতের নেতৃত্ব সামলে টেস্ট থেকে অবসর নেন ধোনি। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব বিরাট কোহলির হাতে তুলে দেন। পরে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্বও কোহলির হাতেই সমর্পণ করে শুধুই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতের সফলতম অধিনায়ক।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।