কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানকে রীতিমত ধুয়ে দিয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। সাবেক সতীর্থ ইমরান যে এখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সেসব তোয়াক্কা না করেই মুখে যা এসেছে তাই বলে দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু সেই ঘটনার ১০ দিন পার না হতেই এবার ইমরান খানের কাছে ক্ষমা চাইলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান। কারণ? তার ভাতিজা ও সাবেক পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ফয়সাল ইকবালকে দেশটির বেলুচিস্তান রাজ্য দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অথচ এই পিসিবি’র ওপর তার ক্ষোভের সীমা ছিল না। আর এখন সুর একেবারে মোমের মতো নরম।
মিয়াঁদাদের মতো বিতর্কিত মন্তব্য খুব কম ক্রিকেটারের মুখ থেকেই শোনা যায়। তিনি মুখ খুলেছেন মানেই বিতর্কের জন্ম হয়েছে। নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ‘বেঈমান’ বলে গালিও দিয়েছেন এই সাবেক অধিনায়ক। কিছুদিন আগে ‘পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ধ্বংস করছেন ইমরান খান’ বলে বিতর্কের ঝড় তুলেছিলেন তিনি। আর এবার সেই তিনিই কিংবদন্তি অলরাউন্ডারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) পাকিস্তানের ‘এআরওয়াই নিউজ’কে মিঁয়াদাদ বলেছেন, ‘আমার কথায় যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স দেখে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তাই ওসব বলে ফেলেছি। প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান ক্রিকেটের সমর্থকদের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। ’
এর আগে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের দিকে বেনজির তোপ দেগে মিয়াঁদাদ বলেন, ‘ভুলে যেওনা আমি তোমার অধিনায়ক ছিলাম। আমি নিজ হাতে তোমাকে গড়ে তুলেছি। তুমি মনে করো তুমি একাই বুদ্ধিমান, বাকিরা কিছুই বোঝে না। পিসিবিতে যাদের নিয়োগ দিয়েছ, তারা ক্রিকেটের কী বোঝে। দেরি হওয়ার আগেই এগুলো নিয়ে চিন্তা করো। ’
তিনি আরও বলেন, ‘পিসিবির কোনো কর্তাব্যক্তি ক্রিকেট বোঝে না। আমি এসব নিয়ে ইমরানের সঙ্গে কথা বলব। দেশের ক্রিকেটের যারা ক্ষতি করছে তাদের কাউকেই আমি ছাড়ব না। বিদেশ থেকে ওয়াসিম খানকে (পিসিবি সিইও, যার জন্ম ইংল্যান্ডে) আনা হলো। সে যদি চুরি করে পালিয়ে যান, ওকে ধরবে কে? পাকিস্তানের লোকজন সব কি মরে গেছে যে বিদেশ থেকে লোক আনতে হচ্ছে!’
দেশের ক্রিকেটারদের অবহেলা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাকিস্তানকে ১৯৯২ বিশ্বকাপ জেতানো দলের এই সদস্য, ‘যারা পাকিস্তানের হয়ে খেলছে তারাই তো দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। এই ক্রিকেটাররা যাতে অবসরের পর শ্রমিক না হয়ে পড়ে তা দেখতে হবে। ওরা ক্রিকেটারদের খেলিয়ে পরে ছুড়ে ফেলে। এই কথা আগেও বলেছি। কেউ শোনেনি। বাইরে থেকে লোক এনো না। পাকিস্তানের যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করো। পাকিস্তানের প্রতি বিশ্বাস রাখো। ’
এখানেই থামেননি মিয়াঁদাদ। ইমরান খানকে রাজনীতিতে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি, ‘আমি তোমার অধিনায়ক ছিলাম, তোমার নেতৃত্বে আমি খেলিনি। রাজনীতিতে একবার আসি, তারপর তোমার সঙ্গে এ নিয়ে কথা হবে। সবসময় তোমাকে নেতৃত্ব দিয়েছি, আর এখন নিজেকে ঈশ্বর ভাবো! তুমি তো মানুষের জন্য কাজ করছ না। আমার বাড়িতে ঢুকে তুমি প্রধানমন্ত্রী হয়ে বেরিয়েছিলে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, এ কথা ইমরান অস্বীকার করতে পারবে না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
এমএইচএম