করোনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দেশের ক্রিকেট স্থগিত হয়ে পড়েছিল। ক্রিকেটাররা কোনো ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ খেলতে পারেনি।
তবে ব্যাটসম্যানদের জন্য এই ফেরাটা মোটেও ভালো হয়নি। বিশেষ করে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যনদের রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। জাতীয় দলের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাটসম্যানরা কেইউ রানের দেখা পায়নি।
প্রেসিডেন্টস কাপের দুটি ম্যাচেই টপঅর্ডারের ব্যাটসম্যানরা ছিল অফ ফর্মে। তবে দুটি ম্যাচেই বৃষ্টির বাধা ছিল বিধায় বোলাররা একটু বাড়তি সুবিধা পেয়েছে। তাই বলে ১০৩ রানে অলআউট হবে সেটা হয়তো কেউ প্রত্যাশা করেনি। তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার কেউই কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানদের কেন এমন পারফরম্যান্স এটা নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হলো শাহরিয়ার নাফিজের। দেশের একসময়ের সেরা এই ব্যাটসম্যান মনে করেন দীর্ঘদিন পর খেলতে নামায় এমনটা হয়েছে। আর সাধারণত দীর্ঘদিন পর খেলতে নামলে ব্যাটসম্যনদের সমস্যা বেশি হয় বলে তিনি জানান। পেসাররা কি উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পেয়েছে, এমনটা তিনি মনে করেন না।
শাহরিয়ার নাফিস বলেন, 'উইকেটটা কঠিন হয়ে যায়নি। আসলে হয় কি অনেক দিন পর যখন খেলা শুরু হয় তখন বোলাররা খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারে। বোলাররা যারা অনুশীলন করেছে তারা সেটার ওপর দিয়েই মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানদের মানিয়ে নিতে সময় লাগে। পরপর দুটি ম্যাচে দেখেছি ব্যাটসম্যানদের একটু যুদ্ধ করতে হয়েছে। টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের জন্য একটু বেশি কঠিন হয়। অনেক দিন নেটে ব্যাটিং করেছে, ম্যাচে তো আর ব্যাটিং করেনি। নতুন বল কিন্তু সুইং করে, বাউন্স করে এ কারনেই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা একটু বেশি খারাপ করেছে। তবে এটা খুবই স্বাভাবিক এটা হতেই পারে। পরের ম্যাচগুলোতে এটা ঠিক হয়ে যাবে। '
বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং বিভাগ নিয়ে অনেক দিন ধরেই অনেক প্রশ্ন ছিল। তবে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে সেই প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। কারণ প্রথম দুই ম্যাচে পেসাররা রাজত্ব করেছে। দেশের ক্রিকেটের জন্য এটা একটা বড় ইতিবাচক দিক।
৩৫ বছর বয়সী এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বলেন, 'এই টুর্নামেন্টে আসলে সবারই মানিয়ে নিতে হবে। মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা রান বেশি পাবে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা রান পাবে না, আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে বোলাররা ভালো করেছে সেটা একটা বেশ ইতিবাচক দিক এটা বেশ ভালো লেগেছে বিশেষ করে পেসারার ভালো করেছে এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক। '
জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান মনে করেন দেশের উইকেট ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। তাই দেশের ক্রিকেট পরিবর্তন হবে ধীরে ধীরে। দেশের বাইরে খেলার জন্য আলাদা পরিকল্পনা করে প্রস্তুতি নেওয়া উচিৎ।
শাহরিয়ার নাফিস বলেন, 'বাংলাদেশে উইকেটগুলো কিন্তু আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। তবে দিন শেষে কথা একটাই যে বাংলাদেশের উইকেট কিন্তু বাংলাদেশেরই থাকবে। এটা অস্ট্রেলিয়া কিংবা দেশের বাইরের উইকেটের মতো আচরণ করবে না। আমরা বেশিরভাগ ম্যাচ কিন্তু দেশেই খেলি। তবে হ্যাঁ দেশের বাইরে খেলতে গেলে কিন্তু সেই রকম উইকেট তৈরি করেই প্রস্তুতি নিতে হবে। '
টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথা হয়, কেন টেস্ট ক্রিকেটে আমরা ভাল করেতে পারিনা। এই বিষয় নিয়ে দেশের ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার মনে করেন টেস্ট নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হবে। ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে বেশি ভাবা হয় বলেই আজ ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ শক্ত একটা অবস্থানে। টেস্ট ক্রিকেট নিয়েও যদি আলাদা করে ভাবা যায় তবে টেস্ট ক্রিকেটেও বাংলাদেশের সুদিন আসবে।
তিনি বলেন, 'টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হবে। আমরা আসলে ওয়ানডে ক্রিকেটটাকে গুরুত্ব দেই বলেই আজকে ওয়ানডে ক্রিকেটে এতো ভালো করছি। টেস্টে ক্রিকেটটাকে নিয়েও ভাবতে হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা পারফরম্যান্সের ওপর জোর দেওয়া উচিৎ তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। '
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২০
আরএআর/এমএমএস