আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করার অনন্য কীর্তি গড়েছেন শিখর ধাওয়ান। কিন্তু ম্যাচটা জিততে পারেনি তার দল দিল্লি ক্যাপিটালস।
চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ১০১ রানে অপরাজিত থেকে জিতিয়েছিলেন ধাওয়ান। এরপর কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে এলো ৬১ বলে ১০৬ রান। তবে ভারতীয় ওপেনারের এমন অসাধারণ রেকর্ড গড়ার পরও ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৬৪ রান তুলে দিল্লি। সহজ লক্ষ্যটা ৫ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে যায় পাঞ্জাব।
তবে ৫ উইকেটের জয় পেলেও শুরুতে কিন্তু বেশ চাপেই পড়ে গিয়েছিল পাঞ্জাব। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল মাত্র ১৫ রান করে আউট হওয়ার পর তুষার দেশপান্ডের করা পঞ্চম ওভারে ২৫ রান তুলে ধাক্কাটা সামাল দেন ক্রিস গেইল। কিন্তু ক্যারিবীয় দানবও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে রবীচন্দ্রন অশ্বিনের বলে আউট হন তিনি।
গেইলের বিদায়ের পর ময়াঙ্ক আগারওয়াল ৫ রান করেই রান আউটের শিকার হন। এর জন্য অবশ্য অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরানের দায় বেশি। তবে নিজের ওই ভুল শুধরে ২৮ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে ১৯তম ওভারেই জয় পাইয়ে দেন। তাকে যোগ্য সমর্থন দেন চাপে থাকা গ্লেন মাক্সওয়েল। অজি অলরাউন্ডার আগের ব্যর্থতা ছাপিয়ে খেলেন ২৪ বলে ৩২ রানের ইনিংস।
এই নিয়ে ১০ ম্যাচে চতুর্থ ও টানা তৃতীয় জয়ে পয়েন্ট টেবিলে হায়দরাবাদ ও রাজস্থানকে হটিয়ে পাঁচে উঠে এলো পাঞ্জাব। তবে হেরে গেলেও ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে এখনও শীর্ষেই আছে দিল্লি।
পাঞ্জাব জিতলেও ম্যাচের সব আলো আসলে কেড়ে নিয়েছেন শিখর ধাওয়ান। ১০৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পথে ১৩টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন এই বাঁহাতি। এই এক সেঞ্চুরিতে আইপিএলে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। এর আগে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে আর কেউ এই কীর্তি গড়তে পারেননি। এছাড়া আইপিএলের ইতিহাসে ২ সেঞ্চুরির মালিকদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে এখন ধাওয়ানের নাম যুক্ত হলো।
ধাওয়ানের কীর্তি এখানেই শেষ নয়। সেঞ্চুরি করার পথে তিনি আইপিএলে ৫ হাজার রানের মালিকও হয়েছেন। এর আগে পাঁচ হাজারি ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন আরও চার ব্যাটসম্যান- বিরাট কোহলি (৫৭৫৯), সুরেশ রায়না (৫৩৬৮), রোহিত শর্মা (৫১৫৮) এবং ডেভিড ওয়ার্নার (৫০৩৭)। শেষের জন অর্থাৎ ওয়ার্নারকে পেছনে ফেলে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও এখন ধাওয়ান। রাহুলের (১০ ম্যাচে ৫৪০) পর চলতি আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও এখন এই ওপেনার (৪০০ রান)।
কিন্তু ধাওয়ানের দুর্দান্ত ইনিংস সত্ত্বেও দিল্লির বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। কারণ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান মাত্র ১৪, যা এসেছে অধিনায়ক শ্রেয়াসের ব্যাট থেকে। ঋষভ পন্তের ব্যাট থেকেও সমান রান এসেছে। এছাড়া শিমরন হেটমায়ার করেছেন ১০ রান।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এমন হারের পরও মোটেই কষ্টে নেই দিল্লি। শ্রেয়াসের কথাতেই সব পরিষ্কার। এখনও শীর্ষে থাকা দলটির অধিনায়ক ম্যাচ শেষে বলেন, 'আমি খুবই খুশি যে এটা (ম্যাচ হেরে যাওয়া) ঘটেছে। কারণ এতে ছেলেরা পরের ম্যাচের জন্য অনুপ্রাণিত হবে। ফিল্ডিং ভালো হয়নি। ফলে আমরা এখান থেকে শিক্ষা নেব এবং ফিরে আসব। ' হেরেও শীর্ষে থাকা দলের অধিনায়ক বলেই হয়তো এমন কথা বলতে পারলেন তিনি। নয়তো এমন কথা কস্মিনকালেও কেউ শুনেছে?
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২০
এমএইচএম