টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় ক্রিকেটের প্রাণ। ক্রিকেটে ভালো করতে হলে টেস্ট ক্রিকেটটা ভালো করতে হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান র্যাডফোর্ড।
র্যাডফোর্ড আরও জানান, দেশীয় কোচদের সঙ্গে কথা বলে বাস্তবতা জেনে নিয়েছেন। ক্রিকেটার মানসিকতা পরিবর্তন করে ভালো মানের টেস্ট ক্রিকেটার তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন তিনি। এছাড়া টেস্ট ক্রিকেটের বিভিন্ন দিক নিয়েও তিনি কথা বলেন।
র্যাডফোর্ড বলেন, 'আমি পুরো সময় ছেলেদের টেকনিক নিয়ে কাজ করব, ওদের পরীক্ষা নেব, টেস্ট ম্যাচের স্বাদ দেওয়ার চেষ্টা করব। আমি কালকে একটি প্রেজেন্টেশনে ওদেরকে বলেছি, বিশ্বের সেরা সব ক্রিকেটারদের দিকে যদি তাকাও- কেন উইলিয়ামসন, বিরাট কোহলি, বেন স্টোকস, স্টিভেন স্মিথ… ওরা সব সংস্করণে ভালো, কারণ ওরা টেস্টে ভালো। তাদের টেকনিকের মৌলিক ভিত মজবুত। ভিত্তি মজবুত হলে এরপর সেখান থেকে টি-টোয়েন্টি বা ৫০ ওভারের খেলায় উন্নতি করা যায়। আমি এই ছেলেদের টেকনিক মজবুত ও আঁটসাঁট করার চেষ্টা করব। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে নিয়ে পরে কাজ করব। '
বাংলাদেশের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স নিয়ে বেশ ভালো ধারণা রয়েছে বলে জানান এইচপি দলের নতুন এই কোচ।
তিনি বলেন, 'দুই বছর আগে ক্যারিবিয়ানে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের সময় আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সঙ্গে ছিলাম। লাল বলের সিরিজে দেখা গেছে, তিন দিনেই ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, মিগুয়েল কামিন্স ও অন্য পেসারদের বোলিংয়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার স্রেফ উড়ে গেছে। সাদা বলের সিরিজে দেখা গেল অন্য বাংলাদেশকে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ তারা জিতে নিল। আমি তাই এখানে বোর্ড ও ক্রিকেটারদের বলেছি, এমন এক দল ক্রিকেটার তৈরি করে দিতে চাই, যারা টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করতে পারে। তারা যেন টেকনিক্যালি আঁটসাঁট হয়, ৯০ মাইল গতির বল খেলতে পারে, ৫ ঘণ্টা ধরে ব্যাট করতে পারে, লম্বা স্পেলে বোলিং করতে পারে। '
কাজের পরিকল্পনা নিয়ে র্যাডফোর্ড বলেন, 'প্রথম দফার এই দুই সপ্তাহ সময় লাল বলের ক্রিকেট নিয়েই কাজ হবে। বোলিং মেশিন ব্যবহার করা, শর্ট বল, সুইং বল সামলানো, সবকিছু এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে টেস্ট টেকনিক নিয়ে কাজ করা যায়। যেখানে কাজ করা জরুরি, সেসব দিক নিয়ে যেন কাজ করা যায়। '
'এখন বিশ্ব ক্রিকেটেই সীমিত ওভারের ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা বেশি। লোকে আইপিএল দেখছে, ৫০ ওভারের ক্রিকেট দেখছে। এখানে স্থানীয় কোচদের কাছ থেকে জেনেছি, এখানকার তরুণ ক্রিকেটাররা লাল বলের ক্রিকেট খুব বেশি খেলেনি। ওদের মানসিকতা তাই শুধু রান করা নিয়েই। কিন্তু ব্যাটসম্যানের পেছনে যখন তিন স্লিপ, একটি গালি থাকবে, তখন বলের পেছনে যেতে হবে, বল ছাড়তে হবে। '- যোগ করেন তিনি।
টেস্ট ক্রিকেটে লড়াই করবে বাংলাদেশ, এমন স্বপ্ন দেখেন এইচপি দলের নতুন এই কোচ। আর সমস্ত চিন্তা তাই টেস্ট ক্রিকেটকে নিয়ে। এটাই তার লক্ষ্য, তার দর্শন, 'আমি চাই টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। সেটা শুধু দেশের মাটিতে নয়, দেশের বাইরেও। অস্ট্রেলিয়ায় মিচেল স্টার্ককে খেলতে হলে এখানেও সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সেই টেকনিক থাকতে হবে, সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে। এটিই আমার লক্ষ্য, আমার দর্শন। এটি নিয়েই কাজ করছি। '
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
আরএআর/এমএইচএম