ব্যাট ও বল হাতে ব্যর্থতার পাল্লা ভারী হচ্ছে সাকিব আল হাসানের। সর্বশেষ বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে দুই ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছেন এই অলরাউন্ডার।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দিনের প্রথম ম্যাচে জেমকন খুলনাকে ২০ রানে হারিয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা। টসে হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান সংগ্রহ করে মুশফিকের দল। জবাবে ১৫৯ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা।
১৫, ১২, ৩, ১১, ১৪, ৪, ১৫ ও ৮। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলে সাকিব আল হাসানের রানের খতিয়ান এটা। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের পাশে সংখ্যাগুলো বেমানান সন্দেহ নেই। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর তার প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, অন্তত ব্যাট হাতে তা পূরণ করতে পারেননি জেমকন খুলনার এই অলরাউন্ডার। এবার বল হাতেও দেখা গেল বিবর্ণ সাকিবকে।
১৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ওপেনার জাকির হাসানের (১) উইকেট হারায় খুলনা। এরপর তিনে নামা সাকিব বিদায় নেন ৮ রান করে। দুজনেই রবিউল ইসলাম রবির শিকার হয়েছেন। দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেছিলেন খুলনার ওপেনার জহুরুল ইসলাম ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
জহুরুলের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়া মাহমুদউল্লাহ ঢাকার পেসার মুক্তার আলীর বলে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন। বিদায়ের আগে ২৬ বলে ২৩ রানের ধীরগতির এক ইনিংস খেলেন এই ডানহাতি। অন্যপ্রান্তে তখনও রানের চাকা সচল রাখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন জহুরুল। তুলে নিয়েছেন দারুণ এক ফিফটি।
রিয়াদের পর কিছুটা চমকে দিয়ে পাঁচে নামেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। কিন্তু প্রায় ৮ মাস পর মাঠে ফেরা মাশরাফি আসরে নিজের প্রথম ম্যাচের মতোই মাত্র ১ রান করেই বিদায় নেন। এরপর জহুরুলের একার লড়াইও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ৩৬ বলে ৪ চার ও ২ বাউন্ডারিতে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে নাসুম আহমেদের শিকার হন তিনি।
জহুরুলের বিদায়ের পর কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় খুলনা। এরপর দলের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান আরিফুল হকও ৭ রানের ইনিংস খেলে রবির বলে ক্যাচ তুলে দেন। শেষদিকে শামিম হাসানের ৯ বলে ২৪ রানের ইনিংস শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। শেষ ওভারে জেতার জন্য খুলনার দরকার ছিল ২৫ রান। খুলনা তুলতে পারে মাত্র ৪ রান। ৯ বল খেলে ১৫ রান নিয়ে অপরাজিত থেকে যান হাসান মাহমুদ।
বল হাতে একাই ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন ঢাকার রবিউল ইসলাম রবি। রুবেল হোসেন ও মুক্তার আলী ২টি করে এবং নাসুম তুলে নিয়েছেন ১ উইকেট।
এর আগে সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ নাঈম, আল আমিন এবং আকবর আলীর ব্যাটে ভর করে ভালো সংগ্রহ গড়ে ঢাকা। ৩৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রান করেন ওপেনিংয়ে নামা সাব্বির। ১৭ বলে ৫ ছক্কায় ৩৬ রান আসে নাঈমের ব্যাট থেকে। আল-আমিন করেন ২৫ বলে ৩৬ রান। আর শেষদিকে আকবর মাত্র ১৪ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন।
বল হাতে ৪ ওভারে ২৬ রান খরচে ১ উইকেট তুলে নিয়েছেন খুলনার মাশরাফি। সমান ওভারে ২৩ রান খ্রুচে ১ উইকেট হাসান মাহমুদের। ১ উইকেট পেয়েছেন নাজমুল হাসানও। ২ উইকেট গেছে শহিদুলের ঝুলিতে। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়ার আগে সাকিব বল হাতেও তেমন কিছুই করতে পারেননি। ৩ ওভারে ৩৬ রান খরচে এই বাঁহাতি স্পিনার ছিলেন উইকেটশূন্য।
৭ ম্যাচে ৪ জয় ও ৩ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে উঠে এলো ঢাকা। দলটির প্লে-অফও এতে নিশ্চিত হয়ে গেল। সমান পয়েন্ট নিয়েও নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় দুইয়ে খুলনা। তবে ঢাকা এক ম্যাচ কম খেলেছে। ফলে পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ মুশফিকদের সামনে এখনও আছে। ঢাকা ৮ ম্যাচই খেলে ফেলেছে। চার ও পাঁচে থাকা মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ও ফরচুন গ্রুপ বরিশালের পয়েন্ট সমান ৪ করে। রাজশাহীর হাতে আছে মাত্র ১ ম্যাচ। বরিশালের হাতে আছে দুই ম্যাচ। ফলে এই দুই দলের মধ্যেই শেষ চারে উঠার লড়াই চলবে। অন্যদিকে ৬ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম অনেক আগেই শেষ চার নিশ্চিত করে ফেলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২০
এমএইচএম