বিসিবি কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙায় ম্যাচ ফি’র ২৫ শতাংশ কাটা যাচ্ছে বেক্সিমকো ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সতীর্থ নাসুম আহমেদকে মারতে উদ্যত হওয়ায় এই জরিমানা গুণতে হচ্ছে ৩৩ বছর বয়সী উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানকে।
মুশফিকের শাস্তির বিষয়টি মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিসিবি’র মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগ।
ম্যাচ চলাকালীন নাসুমকে অপমান করার দোষ খুঁজে পাওয়া গেছে মুশফিকের বিরুদ্ধে। তিনি এই অপরাধ করে নিয়মের লেভেল-১ (২.৬) ভঙ্গ করেছেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের শাস্তিস্বরূপ একটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়েছে মুশফিকের নামের পাশে। বেক্সিমকো ঢাকার অধিনায়ক আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু না শুনিয়ে এই শাস্তি মেনে নিয়েছেন।
মুশফিকের বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ আনেন দুই ফিল্ড আম্পায়ার গাজী সোহেল এবং মাহফুজুর রহমান, তৃতীয় আম্পায়ার মাসুদুল রহমান ও চতুর্থ আম্পায়ার মাহিদুজ্জামান স্বপন এবং শাস্তি আরোপ করেছেন ম্যাচ রেফারি এএসএম রকিবুল হাসান।
নিয়ম বা কোডের আর্টিকেল ৭.৫ অনুসারে, যদি মুশফিক টুর্নামেন্টে চারটি বা তার অধিক ডিমেরেটি পয়েন্ট পান, তাহলে এই পয়েন্টের কারণে তিনি ম্যাচ নিষিদ্ধ হবেন। চার ডিমেরিট পয়েন্ট মানে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ।
লেভেল-১ ভঙ্গ করলে কমপক্ষে শাস্তি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্কতা জানানো হয় এবং সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি’র ৫০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়, এবং এক বা দু’টি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়।
এর আগে সোমবার বাঁচা-মরার এলিমিনেটর ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বেক্সিমকো ঢাকা ও ফরচুন বরিশাল। যেখানে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে তামিম ইকবালদের বরিশালকে ৯ রানে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নেয় মুশফিকদের ঢাকা। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় ঘটে বরিশালের।
তবে এ ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসের ১৭তম ওভারে এক অপ্রীতিকর ঘটনার সাক্ষী হতে যাচ্ছিল মিরপুর স্টেডিয়াম। সেই ওভারের শেষ বলে স্কুপ করতে গিয়ে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন বরিশালের ভরসার প্রতীক আফিফ হোসেন ধ্রুব, কিন্তু ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে।
সেসময় ম্যাচ জিততে ১৯ বলে ৪৫ রান প্রয়োজন ফরচুন বরিশালের। বোলার শফিকুল ইসলামের সেই ওভারের আগের পাঁচ বলে ১০ রান উঠেছিল। আফিফকে আউট করার ক্যাচ মুশফিক গ্লাভসবন্দি করলেও ফাইন লেগে দাঁড়ানো নাসুম আহমেদের দিকে আক্রমণাত্মকভাবে তেড়ে যান তিনি, রাগী চোখে নাসুমের মুখে ঘুষি মারার ভঙ্গিমা করেন তিনি।
ঘটনাটি আসলে আফিফের ব্যাটে লেগে বল যখন পেছনের দিকে যাচ্ছিল, মুশফিক আর নাসুমও ধীর পায়ে সামনে এগুচ্ছিলেন। তবে মুশফিক বলের কাছাকাছি চলে যাওয়ায় থেমে যান নাসুম। ক্যাচটি লুফে নেয়ার পর নাসুমের সঙ্গে মৃদু ধাক্কার মতো লাগে মুশফিকের। আর এতেই চটে যান মুশি।
ইনিসের ১৩তম ওভারে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটে। বল করছিলেন নাসুম। আফিফ হোসেন মিড অনে বল ঠেলে দেন। তখন দুজনই ফিল্ডিং করতে চলে গিয়েছিলেন সেখানে। নাসুম স্ট্যাম্প ছেড়ে বল ধরতে চলে যান অন্যদিকে কিপিং গ্লাভস হাতে দৌড়ে আসেন মুশফিকও। ঠিক সেসময় স্ট্রাইক প্রান্তটি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। বল নেওয়ার পর মুশফিক রেগে গিয়ে নাসুমকে বল ছুঁড়তে মারতে যান।
মুশফিককে এ ম্যাচে আরও কয়েকবার চোটতে দেখা যায়। তবে ম্যাচ জয়ের জন্যই যে তিনি এমন ছিলেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও সঙ্গে সঙ্গে অধিনায়কের কাছে ক্ষমা চান নাসুম, পর মুহূর্তেই আবার তার পিঠ চাপড়ে দেন মুশফিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
আরএআর/ইউবি