মাঠে আচরণবিধি ভাঙায় তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। তবে সাকিব শাস্তি পেলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক কিন্তু শেষ হচ্ছে না।
বিষয়টিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে তাই তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। এজন্য ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরবর্তী বোর্ড সভার আগে এই তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
শনিবার ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান কাজী ইনাম এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের শাস্তি ঘোষণার পর আম্পায়ারিং বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে এমনটাই জানিয়েছেন।
তিনি জানান, তদন্ত কমিটিতে তিনি নিজে ছাড়াও থাকছেন বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, বিসিবির পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও শেখ সোহেল এবং বিসিবির প্রধান ম্যাচ রেফারি ও সাবেক ক্রিকেটার রকিবুল হাসান।
গত শুক্রবার আবাহনীর ব্যাটিংয়ের সময় নিজের প্রথম ওভারে বল করতে শেষ বলে আবাহনীর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর আবেদন করেন সাকিব। আম্পায়ার সাকিবের আবেদনে সাড়া না দিলে লাথি মেরে স্ট্যাম্প মোহামেডানের অধিনায়ক।
এর পরের ওভারে বৃষ্টি নামলে আম্পায়ার খেলা বন্ধ করলে সাকিব দুই হাতে স্টাম্প উপড়ে ফেলে মাটিতে আছড়ে মারেন। সাকিবের এহেন আচরণের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সমর্থক থেকে সাবেক ক্রিকেটাররা। তবে সাকিবের আচরণ নিয়ে যেমন বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তেমনই ওই ম্যাচের আম্পায়ারিং নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে। বিশেষ করে, মুশফিকের বিপক্ষে লেগ বিফোরের আবেদন এবং পরে বৃষ্টি বাধায় খেলা বন্ধ করার আগে ওভারের এক বল বাকি থাকার কারণে।
দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশের যুক্তি, মুশফিক নিশ্চিতভাবেই এলবিডব্লিউ ছিলেন। আর সোহরাওয়ার্দী শুভর ওভারের একটা বল বাকি থাকতেই খেলা স্থগিত করার ব্যাপারটি নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ ওই এক বল খেলা হলেই বৃষ্টিতে খেলা আর না গড়ালেও ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে মোহামেডান জিতে যেত। একটা বল অনায়াসেই হতে পারতো। । ফলে রাগের মাথায় সাকিবের স্ট্যাম্প তুলে আছাড় মারাকে অনেকে সঠিক বলেই মানছেন।
শুধু ওই এক ম্যাচেই নয়, এবারের ডিপিএলসহ ঘরোয়া ক্রিকেটের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ক্রিকেটেও আম্পায়ারিং নিয়ে বহু বিতর্কিত ঘটনা অতীতে সামনে এসেছে। কিন্তু বিসিবির টনক নড়েনি। এবার সম্ভবত দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা নড়েচড়ে বসেছে।
জানা গেছে, সিসিডিএম চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ এবং টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি জালাল ইউনুসের সঙ্গে এক সভায় বসেছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। তিনি কালকের ঘটনার উৎস জানতে চেয়েছেন। এ ব্যাপারে কাজী ইনাম বলেন, ‘আগামী দুই দিনের মধ্যে আমরা সব ক্লাবের ম্যানেজার ও অধিনায়কদের সঙ্গে বসব। তাদের কাছ থেকে ডিপিএলের কোনো ইস্যু কিংবা কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ থাকলে তা শুনবো। আমরা অনেক খরচ করে লিগটা করছি। ভালোভাবে শেষ করতে চাই। এমনকি খেলাগুলো পিচ ভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। এতকিছু যখন করা হচ্ছে… বোর্ড সভাপতি প্রশ্ন করেছেন, এরপরও যদি এমন কিছু হয় তাহলে লিগ চালানোর দরকার কি?’
ডিপিএলের আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে কাজী ইনাম জানান, বিসিবিও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। তিনি বলেন, ’১৫ তারিখের বোর্ড সভায় সভাপতিকে আমরা তদন্তের রিপোর্ট দিতে পারব। বোর্ড সভাপতি আম্পায়িং নিয়ে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি পরিপূর্ণ রিপোর্ট চান। এজন্য আমরা সব ক্লাবের সঙ্গে বসে কথা বলব। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২১
এমএইচএম