ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

জবাবটা ব্যাটেই দিলেন মুশফিক

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২২
জবাবটা ব্যাটেই দিলেন মুশফিক ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: সিরিজ শুরুর আগে সিনিয়র ক্রিকেটারদের অবসর নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন যেন বোমা ফাটালেন। তাঁর মন্তব্য ঘিরে কম আলোচনা-সমালোচনা হয়নি।

 

অনেকের ধারণা বিসিবি বসের এমন মন্তব্য মুশফিককে নিয়েই। তবে এ নিয়ে কোনো টু শব্দটি করেননি মুশি! সিরিজ শুরুর আগে মৌন মুশফিক সবকিছুরই জবাবটা যেন দিলেন প্রিয় ব্যাটেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জ্যৈষ্ঠের রোদে পুড়ে দুর্দান্ত এক শতরানে 'মিস্টার ডিপেন্ডেবল' বুঝিয়ে দিলেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি।

মুশফিক উইকেটে এসেছিলেন কিছুটা বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে। দলীয় ১৮৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে একটু যেন চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। শান্ত–মুমিনুলের দ্রুত বিদায়ে উঁকি দিচ্ছিল আরও একবার মিডল অর্ডার ধসে পড়ার। সেই চাপ বাংলাদেশ দ্রুতই উতরে যায় তামিম-মুশির ব্যাটে। ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে দুই বন্ধু মিলে প্রথমে সামাল দিলেন পরিস্থিতি।  

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৩৭ রান যোগ করার পর তামিম রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়লেও অটল ছিলেন মুশফিক। এবার লিটনের সঙ্গে ১৬৪ রানের অনবদ্য জুটি গড়েন মুশফিক। মধ্যাহ্ন বিরতির পর দলীয় ৩৮৫ রানে শতরানের আফসোসে পুড়ে লিটন বিদায় নিলেও মুশফিক দাঁড়িয়ে ছিলেন ধৈর্য্যের প্রতীক হয়ে। শেষ পর্যন্ত অষ্টম শতরানটা তুলে নেন। এ শতক হাঁকাতে মুশফিক খেলেছেন ২৭০ বল।

দেড় দশকের ক্যারিয়ারে দুর্দান্ত সব ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়ে মুশফিক হয়ে উঠেছেন দলের অটোমেটিক চয়েস। সেই কঠোর পরিশ্রমী মুশফিক এখন যেন বিসিবির চক্ষুশূল। কিপিং গ্লাভস কেড়ে নেওয়ার পর এখন দল থেকে ফেলতে পারলেই যেন বাঁচে বিসিবি! সেজন্য মুশফিকের এই শতরান যেন শুধু মাত্র একটি সেঞ্চুরি নয়, এ যেন অনেক কিছুর জবাব।

সেঞ্চুরিতে পৌঁছার দিন দারুণ এক মাইফলকও গড়েছেন মুশি। দেশের হয়ে টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ করেছেন তিনি। এই নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে তার রয়েছে ৮টি শতক, ২৬টি অর্ধ শতক। আছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরিও।

২০০৫ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ বছরের পথচলা মুশির। দীর্ঘ এই সময়ে পার করেছেন অনেক চড়াই-উৎরাই। বোর্ডের সঙ্গে মৌন দ্বন্দ্ব থাকলেও প্রকাশ করেননি কখনো। অভিমান নিয়ে উইকেট কিপিংয়ের দায়িত্ব ছাড়া কিংবা দল থেকে বাদ পড়া সবই যেন তার কাছে স্বাভাবিক ঘটনা। সর্বশেষ গত বছর নভেম্বরে পাকিস্তান সিরিজেও খারাপ পারফরম্যান্সের অজুহাতে বাদ পড়েন মুশফিক।

ব্যাটটা কথা বলছিল না বলে জবাবটাও দেওয়া হচ্ছিল না। নিশ্চয় মুখে নয়, এভাবেই দুর্দান্ত সব ইনিংসে সামনেও জবাব দিতে চাইবেন মুশি!

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২২
এমআর/টিসি/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।