নদীর ঢেউ নেই, সেতুর সৌন্দর্যও। আছে বিজয়ের উৎসব, আনন্দের উচ্ছ্বাস।
থাকা আর না থাকার দোলাচলে হয়তো দুলেছে পুরো দেশই। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ কখনও আশায় বুক বেধেঁছেন, কখনো প্রমত্মা পদ্মার জলের সঙ্গে ভেসে গেছে স্বপ্ন। নতুন করে তাদের প্রত্যয়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বহু দূরের পদ্মাপাড়ে তার হাতেই উন্মোচিত হয়েছে দেশের দখিনের দুয়ার। ওই আনন্দে ভেসে গেছে মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামও। এমনিতে খেলা নেই, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও দেশের বাইরে।
মাঝেমধ্যে দুয়েকটা ক্যাম্প চলছে, মিরপুরের ব্যস্ততা ছিল এতটুকুই। কিন্তু শনিবার (২৫ জুন) শেরে বাংলা সেজেছিল একটু আলাদা করে। ঝাঁড়বাতির ঝলকানি দেখা গেল দিনের আলোতেও। থাকল বড় বড় সব ব্যানার।
সেসবে প্রধানমন্ত্রীর ছবি আছে, আছে পদ্মারও। তাতে লেখা স্বপ্নপূরণের বার্তা, লড়াই করতে পারার গৌরব। মূল আয়োজনটা হলো স্টেডিয়ামের ভেতরে, সবুজ ঘাসে। দুই পাশে দুইটা বড় পর্দা, মাঝে কেক কাটার আলাদা মঞ্চ।
আরেকটু দূরে কয়েকটা চেয়ারসহ আলাদা একটা স্টেজ। তাতে এসে বসলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও অন্য কর্মকর্তারা। সাইট স্ক্রিনে সরাসরি চলল পদ্মাপাড়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
অতিথিরা বক্তব্য দেন, প্রধানমন্ত্রীও। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকেন শ দুয়েক মানুষ। এখানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন থাকেন, থাকেন সাংবাদিক কিংবা ক্রিকেটাররাও। এই দিনটা তো সবার; বার্তাটা যেন মেলে আরও একবার।
খরস্রোতা পদ্মার চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে নদীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়ায় সেতু। তার পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী অবমুক্ত করেন ডাক টিকিট, বাংলাদেশ ব্যাংকের নোট আর স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পের ক্রিকেটাররা সাইট স্ক্রিনের দিকে চোখ দেন। নাঈম ইসলাম, ইমরুল কায়েসদের মতো অভিজ্ঞদের কাঁধে কাঁধ মেলান তরুণ হাসান মাহমুদ অথবা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। করতালিতে ফেটে পড়ে মিরপুর।
পদ্মাপাড়ের অনুষ্ঠান এগোয়। প্রধানমন্ত্রী গাড়িতে ওঠেন, টোল দেওয়া উদ্বোধন করেন, মোনাজাতে প্রার্থনা হয় দেশের জন্য। বড় পর্দা থেকে চোখ সরে না মিরপুরের। সব আয়োজন শেষে কেক কাটেন বিসিবি সভাপতি ও কর্মকর্তারা।
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে; বড় পর্দায় দেখানো হয় তাদের বার্তা। চোখেমুখে উচ্ছ্বাস নিয়ে তারা ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রীকে।
তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসানরা আদতে ধন্যবাদ জানান পুরো দেশের হয়ে। পদ্মায় বহু স্রোত বয়ে যাবে, তবুও নিশ্চয়ই জমা হয়ে থাকবে এই আনন্দ। দখিনের মানুষের অতীতের চোখের জল নিশ্চয়ই আনন্দাশ্রু হয়েছে আজ। ভবিষ্যতে কখনো কখনো এটাও হয়তো জানা যাবে, দেশের গৌরব আর আনন্দের এই ক্ষণের আঁচ লেগেছিল মিরপুরেও।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
এমএইচবি/আরইউ