ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আমার বই দিয়েছি, অন্যেরটা নিয়েছি

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
আমার বই দিয়েছি, অন্যেরটা নিয়েছি ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: মাত্র ৮৬টি বই নিয়ে ২০২০ সালে যারা বই বিনিময় এর কাজ শুরু করেছিলেন, এখন তাদের আছে হাজার হাজার বই। এসব বই নিয়েই শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) নগরের জামালখান মোড়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে শীতকালীন বই বিনিময় উৎসব।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্টোরিটেলিং প্লাটফর্ম ‘ফেইল্ড ক্যামেরা স্টোরিজ’ এর আয়োজনে বই বিনিময় উৎসবে আসেন নানান শ্রেণি-পেশার বইপ্রেমীরা।

আয়োজকরা জানান, আমাদের ছোটবেলা থেকে জীবনের শেষ অবধি বই এক পরম সঙ্গীর মতো।

শীতকালীন সময়ে জনজীবন কিছুটা শান্ত থাকে। শীতের মোলায়েম সময়টায় ফেইল্ড ক্যামেরা স্টোরিজ চায় মানুষ একটু বইয়ে হাত রাখুক। অলস ছোট্ট বিকেলগুলোয় মিষ্টি রোদে বই পড়ুক।  

‘আবার ডিসেম্বর মানেই আমাদের শীতকালীন অবকাশ। সেই বার্ষিক পরীক্ষা দেওয়ার পর আমরা বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে ধার নিয়ে তিন গোয়েন্দা, হুমায়ুন আহমেদ এর বই, সমরেশ, সুনীল কিংবা ইনফার্নো সিরিজের বই পড়তে বসে যেতাম লেপের তলায়। যান্ত্রিক ব্যস্ততা আর একাডেমিক পড়াশুনা মিলিয়ে আমরা আমাদের সেই সময়গুলোকে যেন ভুলতে বসেছি। বইপড়ার সংস্কৃতিকে আমরা আবারো ফিরিয়ে আনতে চাইছি’।

মননশীল জাতি গড়ে তুলতে বই পড়ার বিকল্প নেই। নিজের জ্ঞানের জগতে বৈচিত্র্য তৈরি করতে বইই একমাত্র সহায়ক। তাই তৃতীয়বারের মতো এই ‘বই বিনিময় উৎসব’ আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।  

কিভাবে হলো এই উৎসব? আয়োজকরা বললেন, ‘ধরুন আমার যে ক’টা ইনফার্নো সিরিজের বই আছে সেসব আমি একজনকে দিয়ে তার সংগ্রহে থাকা ভিটো করলিওর বইগুলো নিলাম। তাতে আমার পড়াগুলো বই সে এবং তার পড়া বইগুলো আমি পড়তে পারবো’৷  

কিংবা ধরুন আমার সেই সময়, প্রথম আলো, পূর্ব-পশ্চিমগুলো আর লাগছে না; এদিকে পকেটে খুব বেশি টাকা নেই বলে সমরেশ মজুমদারের ত্রিরত্ন কিনতে পারছি না। তাই আমি চারপাশে খুঁজছি এমন কাউকে যিনি বইগুলো বিনিময় করবেন। হ্যাঁ, বইয়ের এমন বিনিময়ের কথা তো ভাবা যায়ই। এই বিনিময়ের গন্ডিটাকে আরো বড় করে তুলতে আমরা উৎসবে রূপ দিয়েছি’।

বই নিতে আসা স্কুল শিক্ষক জামিলুর রেজা জানান, শীতকালীন বই বিনিময় উৎসবে যে কেউই তার পঠিত দশটি বই দিয়ে অন্য একজনের রেখে যাওয়া পঠিত বইয়ের সাথে এক্সচেঞ্জ করতে পারছেন। জামালখানজুড়ে ফুটপাতে বইয়ের পসরা সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন ক্যাটাগরির এই বই বিনিময় উৎসবে মিলছে সবরকমের বই। পাঠকের বইগুলো রেখে নিজের পছন্দমতো অন্য বই নিয়ে যেতে পারছেন৷ আমার বই দিয়েছি, অন্যেরটা নিয়েছি। এটা অন্যরকম আনন্দ।

গত মার্চে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বই বিনিময় উৎসবে বই বিনিময় হয়েছে বিশ হাজার। উৎসবটি হয় বিনামূল্যে। নেই কোনো বয়সসীমা। বই বিনিময় উৎসব সম্পর্কে জানতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোলা হয়েছে ‘বই বিনিময় পাঠাগার’ গ্রুপ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২২
এসএস/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।