ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নগরে বেড়েছে মাদকের মামলা ও আসামির সংখ্যা

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৩
নগরে বেড়েছে মাদকের মামলা ও আসামির সংখ্যা ...

চট্টগ্রাম: বন্দরনগরীতে গত এক বছরে মাদক সংক্রান্ত মামলা ও আসামি বেড়েছে। ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পাচারের মামলা দায়ের হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন, আটক হচ্ছে পাচারকারীরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা স্বত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না মাদকের বিস্তার।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের ২০২২ সালের দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ছাড়াও পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন ও কোস্টগার্ড মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।  

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে মামলা হয়েছিল ১ হাজার ৫৯ টি। ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১২৬টি। ২০২১ সালে আসামি গ্রেফতার করা হয়েছিল ১ হাজার ১৪৩ জন। ২০২২ সালে ১ হাজার ১৭১ জন। এছাড়া ২০২১ সালের মোট ৪ হাজার ৭০২টি অভিযানে ৭ লাখ ৯২ হাজার ৫৯২ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এ সময় ৮৮ কেজি ১৮০ গ্রাম গাঁজা, ৭৫ লিটার চোলাই মদ ও ক্রিস্টাল মেথ ২ গ্রাম উদ্ধার করা হয়েছে। ২০২২ সালে মোট ৪ হাজার ৭৪৪টি অভিযানে ৬ লাখ ৫১ হাজার ৮৪১ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এ সময় ৯৫ কেজি ২৯  গ্রাম গাঁজা, ১৭৫ লিটার চোলাই মদ ও ক্রিস্টাল মেথ ২ গ্রাম,  ১ শত ৭১টি বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সমাজবিজ্ঞানী ড.ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, মাদককে কোনওভাবে রোধ করা যাবে না, যদি না দেশপ্রেম ও ধর্মীয় মূল্যবোধ না থাকে। মাদক বেড়ে যাওয়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায় এড়াতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষ অফিসার ও প্রত্যেক অঞ্চলের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি নিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। মাদক ভয়াবহতা রুখতে না পারলে আমরা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর  যে স্বপ্ন দেখছি, তা বরবাদ হয়ে যাবে। এ জন্য মাদকের ভয়াবহতা থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মাদকের মামলা বেড়ে যাওয়া মানে মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। মাদক নিয়ন্ত্রণে যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, সেটা সঠিকভাবে হয়নি। সে ক্ষেত্রে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। মাদকের মামলায় শাস্তি দৃশ্যমান হলে মাদকের ডিমান্ড হ্রাস ও সাপ্লাই কমে যেত। অভিযোগ রয়েছে, মাদক সরবরাহে কতিপয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য জড়িত হয়ে পড়ছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। পরিকল্পনা করে মাদকসেবীদের দমনের চেয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সোমেন মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে মাদক পাচারের রুট ও স্পট চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাদক পাচারকারী, বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী, মজুদদার, বহনকারীসহ গডফাদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, জেলখানায় প্রচারণা, পথসভা, বিভিন্ন স্পষ্টে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে গণসচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও স্কুলে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৩
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।