ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সন্তানের পা পুড়িয়ে করাতেন ভিক্ষাবৃত্তি, গ্রেফতার মা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
সন্তানের পা পুড়িয়ে করাতেন ভিক্ষাবৃত্তি, গ্রেফতার মা ছবি প্রতীকী

চট্টগ্রাম: বেশি ভিক্ষা পেতে ১১ বছরের শিশুর পায়ে পলিথিন পুড়িয়ে ক্ষত করার অভিযোগে ওই শিশুর মা হোসনে আরা বেগমকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো।  

রোববার (১২ মার্চ) রাত দশটার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানার বদনাশাহ মাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

 হোসনে আরা বেগম, নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার  চর মটুয়া হানিফ মেম্বার বাড়ির মৃত আব্দুল খালেক ভূইয়ার মেয়ে।

পিবিআই জানিয়েছেন, নগরের পাঁচলাইশ থানায় গত বছরের ১৯ নভেম্বর শিশুকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োগের অপরাধে শিশু আইন ২০১৩–এর ৭১ ধারায় মামলাটি করেন ওই থানার উপপরিদর্শক নুরুল আলম।

এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রাম-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা পাঁচলাইশ থানা-পুলিশকে শিশুটির মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে পিবিআইয়ের একজন পরিদর্শককে দিয়ে তদন্তের জন্য বলেন। এর আগে মেয়েটিকে হেফাজতে নিয়ে ২০২২ সালের ১ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে হাজির করে পিবিআই।  

জবানবন্দিতে মেয়েটি আদালতকে জানায়, চট্টগ্রাম শহরের বদনা শাহ মাজার গেটে মায়ের সঙ্গে ভিক্ষা করত সে। বেশি ভিক্ষা পেতে মা তার পায়ে পলিথিন পেঁচিয়ে পুড়িয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে দিতেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মেয়েটিকে রাশেদুল দম্পতির বাসায় কাজে দেন হোসনে আরা। পুনরায় ভিক্ষা করার জন্য রাশেদুলের বাসা থেকে আনতে গেলে মায়ের কাছে যেতে চায়নি শিশুটি। তদন্ত শেষে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহেদুজ্জামান চৌধুরী আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন গত সেপ্টেম্বর মাসে। এতে বলা হয়, শিশুটিকে অপহরণের অভিযোগ করা হলেও ঘটনাস্থলের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় দেখা যায়, শিশুটিকে ওই দম্পতির কাছে তুলে দেন হোসনে আরা বেগম। এ কারণে ওই দম্পতি জড়িত নন। ১১ বছর বয়সী শিশুটি  বর্তমানে চট্টগ্রামের ফরহাদাবাদে মহিলা ও শিশু কিশোরী নিরাপদ হেফাজতিদের আবাসনকেন্দ্রে (সেফ হোম) রয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হোসনে আরা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। হোসনে আরা বেগম একজন ধূর্ত প্রকৃতির মহিলা। নিজের একমাত্র মেয়েকে দিয়ে তিনি ভিক্ষা করান। ভিক্ষা করাতে গিয়ে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের জন্য সে তার সন্তানের শরীরে বিভিন্ন আঘাতের সৃষ্টি করে। সন্তানকে দিয়ে ভিক্ষা করানোর মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে তিনি জুয়া তথা ছক্কা খেলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।