ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রতিদিন ৩০০ এতিম-অসহায়ের সঙ্গে সেহেরি করেন ইয়াসির

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
প্রতিদিন ৩০০ এতিম-অসহায়ের সঙ্গে সেহেরি করেন ইয়াসির

চট্টগ্রাম: দু'টি এতিমখানার প্রায় দুইশ এতিম। সেই সঙ্গে থাকে আরও একশ’র মতো পথচারী অসহায়।

রমজানের শুরু থেকে একেকদিন একেক রকম সুস্বাদু খাবার পরিবেশ করা হয় সেহেরিতে। পুরুষের পাশাপাশি থাকেন মহিলারাও।
এসব এতিম-অসহায়দের সঙ্গে বসে সেহেরি করেন আয়োজক নিজেই। তিনি নগর যুবলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত।

রমজান মাস, বহুবিধ কল্যাণ ও ফজিলতের মাস। এ মাসে যে যেভাবে পারেন, সওয়াব ও কল্যাণের কাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। পাড়া-প্রতিবেশী কিংবা অপরকে খাওয়ানোর কথা আমাদের অনেকেরই জানা আছে।

রমজানে অন্যতম আমল হলো- অপরকে ইফতার-সেহরি করানো। আর সেটি যদি হয় কোনো অসহায়কে, তখনতো প্রতিদান আরও বহুগুণে বেড়ে যায়।

চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে আতিথেয়তার কথা সর্বজনবিদিত। এটা ঐতিহ্যও বটে। বিলিয়ে দিয়ে চিত্তের ঢেঁকুর নেওয়া তাদের স্বভাব।  

বলছিলাম চট্টগ্রাম নগরের ঐতিহ্যের এক পরিবারের কথা।

প্রতিদিন ৩০০ মানুষের সেহেরির আয়োজন করেন পরিবারটি। চার বছর ধরে এ মহতী কার্যক্রম চলমান রয়েছে তাদের। প্রথম রমজান থেকে শেষ রমজান পর্যন্ত চলে এ কার্যক্রম। দুইটি এতিমখানার অর্ধশত এতিম, মুসল্লি, সাধারণ মানুষ ও এলাকার কিছু সংখ্যক মহিলা সেহেরি খেতে আসেন এ আয়োজনে।

অসহায় ও গরিবদের মাঝে প্রত্যেক সেহেরিতে খাবার তৈরি করে খাওয়াচ্ছেন সে পরিবার। পরিবারের ছেলে-মেয়ে সবাই এই আয়োজনে সামিল। মা-ছেলে-মেয়েরা মিলে সেহেরি তৈরিতে হাতে-হাত মিলিয়ে কাজ করেন। আর ছেলে ইয়াসির বিভিন্ন স্বাদের তরিতরকারিগুলো তুলে দেন অসহায়দের পাতে।  

নিজের ব্যক্তিগত আমলের পাশাপাশি এভাবে সবাইকে নিয়ে সেহেরির আয়োজনে সবাই খুশি মনেই অংশগ্রহণ করছে। একে অপরকে সহযোগিতা করছেন। রোজার শুরু হতে নেওয়া এ মহতী উদ্যোগকে সফলতার সঙ্গে শেষ অবধি বাস্তবায়ন করে যেতে চান ইয়াসির।

যুবলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত বাংলানিউজকে বলেন, আমার ইচ্ছা এ ধরনের আয়োজন আগামীতে আরো ব্যাপক আকারে করা। আমার এই আয়োজন দেখে যেন তরুণরা উদ্যোগী হয়  প্রত্যেক পাড়ায়-মহল্লায়  এই ধরনের আয়োজন করার আগ্রহ ছড়িয়ে দিতে চাই। একদিকে সমাজের অসহায় মানুষরা উপকৃত হবে অন্যদিকে এ মাহে রমজানে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক মহা সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়াও পরিবারের সকলে মিলে এসব কাজ করতে পারা একদিকে যেমন আনন্দের, অন্যদিকে উপভোগের।

তিনি আরও বলেন, সেহেরির দৈনন্দিন এ আয়োজন সম্পাদনে পরিবারের প্রত্যেকের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। যাতে সেহেরির আগেই পুরো কাজ শেষ করা যায়। তারপরও তা আমরা গরীব-অসহায়দের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেই।

একেকদিন একেক রকম খাবার আয়োজন করেন ইয়াসির আরাফাত। একদিন সাদাভাত, মুরগির মাংস, সবজি, ডাল তো অন্যদিন আকনি বিরিয়ানি, নলার ঝোল। এছাড়াও কোনো দিন সাদাভাত, মাছ, মাছের মাথা দিয়ে আলু ও মাছের ডিম। পরের দিন খিচুড়ি, ডিম, মুগডাল। সাদা ভাত, গরুর মাংস, নলার ঝোল। এরপর সাদাভাত, ঘন মুগডাল, লইট্টা শুটকি আলু ভাজি, ডিম। সাদাভাত, মুরগির মাংস সবজি ডাল। যাতে এতিম-অসহায়দের এক রকম খাবার খেতে অনীহা তৈরি না হয়। সেজন্য ইয়াসির সপ্তাহজুড়েই ভিন্ন কিছু আয়োজন করেন।

রাত দেড়টার দিকে তাহাজ্জুদ নামাজের শেষে আড়াইটার থেকে সেহেরির খাবার পরিবেশন করা হয়। আমার বাসার সামনের বাগানে খারারের পরিবেশন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৪০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।