ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিএনপির চট্টগ্রামের নেতাও অনেক কথা বলেন: ভূমিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২৩
বিএনপির চট্টগ্রামের নেতাও অনেক কথা বলেন: ভূমিমন্ত্রী

চট্টগ্রাম: ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, বিএনপির চট্টগ্রামের নেতাও অনেক কথা বলেন আওয়ামী লীগ নিয়ে। আমি উনাকে প্রশ্ন করতে চাই, কী বলছেন? লজ্জা শরম আপনাদের থাকা উচিত।

আপনারা যে চুরি ডাকাতি করে, মানুষের কোনো কিছু না করে আবার ক্ষমতায় আসার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। বিদেশিদের কাছে ধন্না দিচ্ছেন ক্ষমতায় বসানোর জন্য।
সিস্টেম অনুযায়ী দেশ চলবে। সংবিধান সামনে রেখে সাংবিধানিক বিধিমালার ওপরই আমরা আগামী নির্বাচন করবো। বিদেশিদের অনেক গ্যাপ ছিল। তারাও বুঝতে পারছেন সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করা কঠিন। আমি আশ্বস্ত করতে চাই, সঠিক সময়ে নির্বাচন হবে। অসাংবিধানিক কথা বলে কোনো লাভ হবে না।  

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিজিএমইএর মাহবুব আলী মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ, বাংলাদেশ (সিসিআরএসবিডি) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডায়ানামিকস অব অনগোয়িং ক্রাইসিস ইন চট্টগ্রাম হিল ট্রাক্টস অ্যান্ড ওয়েস ফরওয়ার্ড শীর্ষক এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিসিআরএসবিডি সভাপতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ।

জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার হবে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, একটি ছোট ক্যাবিনেট হবে। এ ক্যাবিনেট রুটিন কাজ করবে। নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দেন। আমরা আত্মবিশ্বাসী আমরা জিতব। আমাদের ওই সৎসাহস আছে। লন্ডনে বসে প্রশাসনের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন, র‌্যাবের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন তিনি ক্ষমতায় চলে আসছেন। এত সোজা নয়। মানুষ অত বোকা নয়। সারা দেশ থেকে মানুষে এনে পল্টনের মাঠে বক্তৃতা দিলে আওয়ামী লীগ চলে যাবে না। সময় থাকতে ঘরে যান। মাঠে যান। নির্বাচনমুখী হোন। আর অন্য চিন্তা করবেন না। আওয়ামী লীগ এখনো ক্ষমতায় ইনশাআল্লাহ। ওটা কাজ হবে না। আর করিয়েন না না। যথেষ্ট হয়েছে। সামনে নির্বাচনে আসুন।  

আপনাদের প্ল্যান কি আমরা জানি। আপনারা চাইছেন আগামী নির্বাচন সঠিক সময়ে না হোক। আবার সেই আগের মতো গ্যাপ হোক। ওটা আর হবে না। সুতরাং ভালো হবে আস্তে আস্তে নির্বাচনমুখী হোন।  

ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা আন্দোলন করেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছি। গণতন্ত্রের সংজ্ঞা শুধু ভোটের দিন ভোট দেওয়া নয়। এটা অনেক ব্যাপক। আজ যে টকশো, সভায় আপনারা এটা ওটা বলছেন এটাও গণতন্ত্রের অংশ। বিশ্বের অনেক দেশে সেন্সর হয়। ফেসবুক বলেন, ইউটিউব বলেন অনেক কিছু সেন্সর হয়। আমাদের দেশে তো অবাধ প্রচুর স্বাধীনতা।  

বিরোধীদলের উদ্দেশে বলতে চাই- দেশের মানুষ শান্তিতে আছে। দেশের উন্নয়ন হয়েছে। দেশ সাড়ে ১৪ বছরে আপনাদের শাসনামল আর আমাদের শাসনামলে রাত আর দিনের পার্থক্য হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আপনারা ভুল কথা, তথ্য দিয়ে কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে আছে। দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার সুযোগ আপনারা নেবেন না। ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিডসহ নানা কারণে নিত্যপণ্যে একটু অস্থিতিশীলতা আছে। ইনশাআল্লাহ, আমার আত্মবিশ্বাস আছে এটা আমরা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসবো। বাজারে যখন জিনিসের দাম বাড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনে কষ্ট হয়। তিনি দেশ ও দেশের জনগণকে নিয়ে ভাবেন।  

বিএনপির উদ্দেশে প্রশ্ন করতে চাই, আপনারা কি ভূমি নিয়ে কোনোদিন চিন্তা করেছিলেন? স্মার্ট মিনিস্ট্রি করে ফেলেছি আমরা। স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সিটি করছি আমরা। কিছু দিন আগে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম আমি ডেভেলপ করছি। প্রশ্ন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্তর পাবেন। চাটগাঁর ভাষা সেখানে অ্যাড অন করেছি। এ কাজগুলো আমরা করছি মানুষের জন্য। আমরা আস্তে আস্তে ধাপে ধাপে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ আরেকবার ক্ষমতায় এলে আমরা আরও অনেক বেশি কাজ করবো। থার্ড টার্মিনাল করছি- এটা তো ল্যান্ডমার্ক। স্মার্ট এয়ারপোর্ট হচ্ছে। পদ্মা সেতু আমরা করে দেখিয়েছি। কিছুদিন আগে একজন ফেসবুকে লিখেছে- সে বিএনপি করলেও পদ্মা সেতুর কারণে যাতায়াত সহজ হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন।

তারা ছলে বলে কলে মিথ্যা কথা বলে ক্ষমতায় আসতে চাইছে। হাওয়া ভবনের কথা চিন্তা করা যায়! বড় বড় কথা বলেন! রাজনীতির কারণে বিরোধিতা করতে পারেন কিন্তু লুজ টক করা ঠিক না। জাতির উদ্দেশে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন, জাতি কি বোকা? 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের ইকোনমিতে অবদান রাখার। সেখানে বিভিন্ন পর্যটন এলাকা রয়েছে যেখানে প্রচুর মানুষ যায় এবং প্রকৃতি উপভোগ করে। সুতরাং আমি বলতে চাই যে অশান্তি সৃষ্টি হয় এমন কাজে সময় নষ্ট না করে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে যদি আমরা নজর দিতে পারি তাহলে দেশের অনেক উপকার হবে।

সিসিআরএসবিডির নির্বাহী পরিচালক চবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবির আইন বিভাগের ডিন ড. আবদুল্লাহ ফারুক।

প্যানেল আলোচক ছিলেন বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত শোভারানী ত্রিপুরা, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, খাগড়াছড়ি মং সার্কেলের চিফের পরিবারের সদস্য রাজকুমার টুইন ইনপ্রু মারমা, এফবিসিসিআইর পরিচালক ডা. মুনাল মাহবুব, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব) মো. এমদাদুল ইসলাম প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।