ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জনসমর্থন নিয়েই দেশ পরিচালনা করতে চাই: তারেক রহমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
জনসমর্থন নিয়েই দেশ পরিচালনা করতে চাই: তারেক রহমান ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অতীতে আমরা শুনেছিলাম, একটি দলের একজন নেতা ভারত থেকে এসে বলেছিলেন, তারা তাদের (ভারতকে) রিকুয়েস্ট করে এসেছে, যেকোনো মূল্যে তাদের ক্ষমতায় রাখতে হবে। আমরা বিএনপি, আমরা এসব বিশ্বাস করি না।

আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ। সেই জনগণের সমর্থন নিয়েই আমরা দেশ পরিচালনা করতে চাই।
আমরা জনগণের কাছে যেতে চাই, জনগণের দুয়ারে যেতে চাই, জনগণকে বলতে চাই-দয়া করে আমাদের দেশ পরিচালনার সুযোগ দিন।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তিকরণে’ বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ভার্চুয়ালি যুক্ত তারেক রহমানকে তারা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তিনি সেগুলোর জবাব দেন।  

‘আমরা ডামি ও নিশি রাতের নির্বাচনে বিশ্বাস করি না জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমার ব্যালট চুরির নির্বাচনে বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের ভোটের। আমরা সেই নির্বাচনে বিশ্বাস করি, যেখানে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বচ্ছভাবে, স্বাধীনভাবে ভয়হীনভাবে ভোট দিবে, আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি। সেটি অর্জন করতে হলে দলের নেতাকর্মীদের চলাফেরায় অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হবে। আপনাদের অনেককিছুর পরিবর্তন করতে হবে। বারে বারে আমি বলছি, জনগণকে সাথে রাখুন, জনগণের সঙ্গী হোন।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের কিছু কিছু সহকর্মীর মনে ৫ আগস্টের পর একটি নতুন উদ্ভূত অনুভূতি এসেছে। অনুভূতিটা হচ্ছে, মনে হচ্ছে আমরা সরকার গঠন করে ফেলেছি। আমি বলতে চাই, আমরা সরকার গঠন করি নাই। আমরা এখনো বিরোধী দলেই অবস্থান করছি। আমরা সরকারে নেই। যেসব সহকর্মী ভুল উপলব্ধি করছেন, তাদের বিভিন্ন আচরণের কারণে বিভিন্ন জায়গায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, দলের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি কঠোরভাবে নির্দেশনা দিতে চাই, আপনারা একেকজন বিএনপির প্রতিনিধি।

৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার নিয়ে তারেক রহমান বলেন, ৩১ দফা ২৭ দফা ছিল। পরে সেটা ৩১ দফা হয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত যতগুলো দল ছিল সব দলের মতামতের ভিত্তিতে আমরা এই ৩১ দফা দিয়েছি। তাহলে আমরা বলতে পারি, এটি বাংলাদেশের কমবেশি প্রায় সকল ডেমোক্রেটিক দলের সম্বলিত প্রস্তাবনা। যার ভেতরে কমবেশি মোটামোটিভাবে আগামী দিনের দেশ পরিচালনা, দেশের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সবকিছু কমবেশি ভাবে আছে।

তিনি আরও বলেন, আপনার এলাকায় যেখানে আপনি থাকেন প্রত্যেকটা মানুষ আপনাকে চিনে বিএনপির একজন নেতা বা কর্মী হিসেবে। আপনি যুবদল , ছাত্রদল  কিংবা তাতীদল যা-ই হোক না কেন সবাই আপনাদের চিনে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে। কেন আপনি এলাকায় এমন কিছু করবেন, যা দ্বারা দলের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আপনার এলাকার মানুষ তো আপনারাই আপনজন, আপনার স্বজন। আজকে বিতর্কিত কাজ করে থাকলে কোন মুখে দুইদিন পরে ভোট হলে ভোট চাইতে যাইবেন দলের পক্ষে। তখন তো ভোটাররা আপনাকে ইনসাল্ট করবে।  

প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী নেতাদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, কেউ যদি মনে করেন, আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমরা যাদের ভাবতাম, তারা মাঠে নেই বা মাঠে দুর্বল, আল্লাহর ওয়াস্তে এ কথা মন থেকে সরিয়ে দিন। আমর ৩৫ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার আলোকে আমি বুঝি, আগামী নির্বাচন কিন্তু অনেক কঠিন হবে যেকোনো নির্বাচন থেকে। যদি আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মাঠে থাকতো বা থাকতে পারতো, সেক্ষেত্রে নির্বাচন যতটা কঠিন হতো, তার চেয়েও আগামী নির্বাচন আরও কঠিন হবে।

এখানে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, অনেক অদৃশ্য শক্তি আপনার বিরুদ্ধে কাজ করছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, আপনি যেহেতু এ দলের প্রতিনিধি, আপনার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র কাজ করছে। একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন। আপনি ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদল কিংবা স্বেচ্ছাসেবক দল, যা-ই হোন না কেন, আল্লাহর ওয়াস্তে এটা একটু চিন্তা করুন যে, বহু ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রকে যদি উপড়ে ফেলতে হয়, এ ষড়যন্ত্রকে যদি উপড়ে আসতে হয় আমাদের ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। আমাদের ধৈর্যশীল হতে হবে, আমাদের আচরণ সেরকম হতে হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে ১৫ বছরে আমাদের দেশের ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে অবৈধভাবে পাচার হয়ে গেছে। ১৫ দিনের মধ্যেই তা আবিষ্কার করতে পেরেছে। এর মানে ভেতরে আরো অনেক কিছু আছে।  

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, ড. মওদুদ আলমগীর পাবেল এবং দলটির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যনি ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১০ সাংগঠনিক জেলা থেকে ৮৫৯ জন উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।