চট্টগ্রাম: স্নান করতে গিয়ে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে কাদামাটিতে পড়ে থাকা এক নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনতে পান মুন্নি জলদাস। শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
বোয়ালখালীর শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের জলদাস পাড়ার ওই গৃহবধূ গত ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে শিশুটিকে উদ্ধার করার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অনেকে তাকে দত্তক নিতে ছুটে আসেন।
কুড়িয়ে পাওয়া সন্তানকে কোলছাড়া করতে না চাইলেও আইনি বাধ্যবাধকতায় মুন্নিকে মানতে হয় আদেশ। বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ দিন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয় শিশুটিকে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা বিজয়ের মাসে পাওয়া এই শিশুর নাম রাখেন ‘বিজয়’।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, শিশু বিজয়কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম নগরের সমাজসেবা অধিদপ্তরের রৌফাবাদ ছোটমনি নিবাসে স্থানান্তর করা হয় ২৯ ডিসেম্বর।
এর মধ্যে কেটে গেছে এক সপ্তাহ। বিজয়কে যেদিন হাসপাতাল থেকে ছোটমনি নিবাসে পাঠানো হচ্ছিল, সেদিন থেকেই মুন্নি জলদাসের ঘুম নেই। সন্তানকে কাছে পেতে তাঁর আকুতি ছুঁয়ে যায় সবার হৃদয়।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) শেষ হয়েছে অপেক্ষার প্রহর। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সহযোগিতায় বিজয় পাচ্ছে ‘মায়ের স্পর্শ’। এ ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ ফাতেমা ও শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের মেম্বার মো.হাসান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা বাংলানিউজকে বলেন, মাত্র একদিনের নিষ্পাপ দুগ্ধ শিশুটিকে মা হয়ে লালন-পালনের ভার নিয়েছিলেন মুন্নি জলদাস। সকল আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুন্নির কাছে তার উপহার হস্তান্তর করা হয়েছে। ছোটমনি নিবাসে শিশুটিকে দেখভাল করতে পারবেন তিনি।
ইউএনও আরও জানান, ওই শিশুর অভিভাবকত্ব পেতে এরইমধ্যে ১৫ জন আবেদন করেছেন। অভিভাবকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়া জটিল। আইনি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আইনজীবী, আদালত ফি, শুনানিতে আদালতে হাজির হওয়া সহ অনেক বিষয় এতে জড়িত। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে আদালত রায় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৫
এসি/টিসি