ঢাকা, বুধবার, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭ রজব ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘প্রয়োজনে বাকি চোখটি দেব, তবুও চবিকে পোষ্য কোটা মুক্ত করবো’

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৫
‘প্রয়োজনে বাকি চোখটি দেব, তবুও চবিকে পোষ্য কোটা মুক্ত করবো’ চবিতে শতভাগ পোষ্য কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে বিরোধিতাকারীদের বিচার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে গড়ে ওঠা প্রশাসন আমাদের আশাহত করছে। তারা স্বাধীন ক্যাম্পাসেও পোষ্য কোটার মতো অমূলক কোটা জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পোষ্য কোটাকে আমরা পশুদের কোটা বিবেচনা করি। কোটার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আমি আমার একটি চোখ হারিয়েছি, প্রয়োজনে আরও একটি চোখ দেব তবুও চবিকে পোষ্য কোটা মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।

শতভাগ পোষ্য কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে বিরোধিতাকারীদের বিচার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের ছাত্র শুভ আহমেদ এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ৮ জানুয়ারি দুপুর ১২টার মধ্যে প্রশাসন এ কোটা বাতিল না করলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।  

চবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরিয়ান বলেন, চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে পোষ্য কোটা নিয়ে আন্দোলন করা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারীরা বেঁচে থাকতে তো নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেই আবার মৃত্যুর পরও কেন্দ্রীয় কবরস্থানে সুযোগ পায়। সেখানে তাদের সন্তানদের কোটা দেওয়া কতটা যৌক্তিক প্রশাসনের কাছে সেটা আমার প্রশ্ন! স্বাধীন বাংলাদেশে কোটার সঙ্গে আপস করা মানে শহীদদের সঙ্গে বেঈমানি করা। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি তাঁরা যেন কোটাবিহীন সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করেন।

চবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী তানিম মুশফিক বলেন, আমরা যোগ্যতার পক্ষে এবং কোটার বিপক্ষে। কারণ কোটা কখনো যোগ্যতা হতে পারে না। আমরা সবসময় নতুনত্বে বিশ্বাসী, আমরা পরিবর্তন চাই। আমরা ৪৭, ৭১, ৭৫, ৯০ এবং সর্বশেষ ২৪-এ স্বাধীন হয়েছি কিন্তু আমরা অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পারিনি। আমরা এখনো আগের কালচার ধরে রেখেছি, আমরা এখনো অন্যায়-অবিচার ধরে রেখেছি, জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারিনি, ইনসাফের পক্ষে দাঁড়াতে পারিনি। আজ আমরা ইনসাফের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি পোষ্য কোটা বাতিল করবেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, এটা শুধু আমাদের নয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশেও আমাদের কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হচ্ছে। যে প্রশাসন শহীদ হৃদয় তরুয়া এবং শহীদ ফরহাদের রক্তের ওপর বসে আছে তাদের কাছে খুনিদের বিচার চাইতে হচ্ছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যদি প্রশাসন এখনো বিচারের নামে তালবাহানা করে, শান্তি কমিটির নামে কোনো তালবাহানা করে, তাহলে শিক্ষার্থীরা খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য হবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের আলোচনায় ডাকার দরকার নাই, জুলাই অভ্যুত্থানেও আমাদের সিদ্ধান্ত রাজপথে হয়েছে এবারও আমাদের সিদ্ধান্ত রাজপথেই জানিয়ে দিচ্ছি, পোষ্য কোটা নামক প্রহসনমূলক কোটা আগামীকাল ১২টার মধ্যে বাতিল করতে হবে। যদি তা না করা হয় আমরা আগামীকাল থেকে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৪
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।