চট্টগ্রাম: জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, শান্ত বাংলাদেশকে অশান্ত করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, চট্টগ্রামেও হচ্ছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ৮ম তলার ভিআইপি, এস রহমান ও সুলতান আহদম মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণিকা স্মারক ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আমাদের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। দেশের দামাল ছেলেরা গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে আবারও বাংলাদেশের মানুষের হাতে তুলে দিয়েছে। ৫৪ বছরের বাংলাদেশে আমরা যা দেখেছি সেটির সাক্ষী আমরা নিজেরাই। যে লক্ষ্যে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল আমরা সেই লক্ষ্যে দেশ গঠন করতে পারিনি। স্বাধীনতার চেতনাকে কাজে লাগিয়ে, ইতিহাস বিকৃতি থেকে শুরু করে সবকিছু করা করেছে আওয়ামী লীগ। জুলাই গণবিপ্লবের স্বাধীনতার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পেতে শুরু করেছি। জাতি স্বাধীন নাগরিক হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, হাজারো শহীদ ও হাজার হাজার আহত পঙ্গুত্ববরণকারী এই সকল মানুষকে যারা হত্যা, অবিচার, নির্যাতন করেছে তার মূল অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ। আজকের অনুষ্ঠান থেকে দাবি হচ্ছে এসব মাস্টার মাইন্ডদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে অন্য কোনো বিচার যদি শেষ সম্ভব না হয় এই মাস্টারমাইন্ডদের বিচারকার্য শেষ করে জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত। তাহলে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে। তিনি বলেন, একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক, ঐক্যবদ্ধ, আদর্শিক বাংলাদেশ গঠন করতে জুলাই বিপ্লবের শহীদরা জীবন দিয়েছেন। সেদিকে এগিয়ে যেতে পারলে তাদের জীবনদান স্বার্থক হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আমির শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, সাবেক চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির আলাউদ্দিন সিকদার, চট্টগ্রাম মহানগর নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কর্ণফুলী পত্রিকার সম্পাদক আফসার উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যক্ষ নুরুল আমিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আমির আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. একেএম ফজলুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, ওলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা মমতাজুর রহমান, মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী প্রমুখ
চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবে যে পৈচাশিক ঘটনা ঘটেছে দুনিয়ার ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা আমাদের জানা নেই। তিনি শহীদ ও আহতদের পরিবারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ১৬ বছর ধরে যত হত্যা, গুম, নৈরাজ্য হয়েছে এর জন্য এক নম্বর দায়ী শেখ হাসিনা। দেশের অশান্তির জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ। সাধারণ নির্বাচনের আগে এই সমস্ত ফ্যাসিস্টদের বিচার করতে হবে।
শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মো. ফয়সাল আহমদ শান্তর বাবা মো. জাকির হোসেন, মোহাম্মদ ফারুকের স্ত্রী সিমা বেগম, ইঞ্জিনিয়ার ওমর বিন আবছারের মা রুবি আকতার, মো. ইশমামের বড়ভাই মুহিবুল হক, মো. মাহিন প্রকাশ সাইমনের অভিভাবক রহিমা বেগম, মো. ইউছুপ প্রকাশ জুনাইদের স্ত্রী সাজেদা বেগম ও এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠান শেষে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান অতিথি ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের তথ্য সম্বলিত ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ শীর্ষক স্মরণিকা স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
বিই/পিডি/টিসি