ঢাকা, রবিবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শিক্ষকের ‘গায়ে হাত তোলা’ চবি ছাত্রীর সনদ বাতিল হচ্ছে না

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
শিক্ষকের ‘গায়ে হাত তোলা’ চবি ছাত্রীর সনদ বাতিল হচ্ছে না ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার অপরাধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমির সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৯ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনা হলের নামফলক ও হলের সামনে নৌকা ভাঙতে গেলে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওই হলের ছাত্রীরা।

এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমি সহকারী প্রক্টর ড. মো. কোরবান আলীর গায়ে হাত তুলেন। এছাড়া ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া এক সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেন ছাত্রীরা।

এ ঘটনায় দুই বছরের বহিষ্কার আদেশ পাওয়া ৯ শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়। পাশাপাশি গণশুনানি ও নতুন তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেই সভায়।  

চবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন বলেন, বহিষ্কার আদেশ পাওয়া ৯ শিক্ষার্থীর ১৫ দিনের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।  

এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হেনস্তার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার অপরাধে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমিকে স্থায়ী বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। বাকি ৯ জনকে দুই বছর করে বহিষ্কার করা হয়।  

তবে ৯ ছাত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে অনেককে। এছাড়া বহিষ্কৃত ছাত্রীরাও কয়েক দফায় সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ জানান প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের। গত ২২ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে একই সিন্ডিকেট সভায় চবিতে শেখ পরিবারের নামে নামকরণ করা তিনটি হলসহ ৬ স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।  

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে মন্তব্য করে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদী চিহ্ন বা তার পরিবারের নামে কোনো স্থাপনার নামকরণ বহাল রাখা শিক্ষার্থীরা মেনে নিচ্ছে না। তাই ৬টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পরিবর্তিত নাম শহীদ ফরহাদ হোসেন হল, আবু ইউসুফ ভবনের পরিবর্তিত নাম শহীদ হৃদয় তরুয়া ভবন, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তিত নাম বিজয় ২৪ হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পরিবর্তিত নাম নবাব ফয়জুন্নেছা হল, বঙ্গবন্ধু উদ্যানের পরিবর্তিত নাম জুলাই বিপ্লব উদ্যান এবং শেখ কামাল জিমনেসিয়ামের পরিবর্তিত নাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়াম।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।