চট্টগ্রাম: বিশ্বের দশম সর্বোচ্চ পর্বত অন্নপূর্ণার ৬ হাজার ৪০০ মিটার থেকে আমি যাত্রা শুরু করেছি। ১ হাজার ৭০০ মিটার পথ ভাঙতে হয়েছে।
ক্যাম্প ২ থেকে ক্যাম্প ৩ যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, মনে হবে শত্রুপক্ষের এমন একটা করিডোর দিয়ে যাচ্ছেন, যেখানে দুপাশ থেকে মেশিনগান দিয়ে গুলি করছে। আপনি এঁকেবেঁকে যাচ্ছেন, উপর থেকে পাথর খসে পড়ছে। ফেরার সময় আমার ভারী বুট থাকায় আমি বেঁচে গিয়েছিলাম। রকফলে পড়েছিলাম।
অন্নপূর্ণা-১ সামিট করে ফেরা পর্বতারোহী বাবর আলী বুধবার (১৬ এপ্রিল) আলিয়ঁস ফ্রসেজ মিলনায়তনে এভাবেই অনুভূতি জানান।
বাবর বলেন, সমতলের দূষণের প্রতিফলন ঘটছে পর্বতে। নেপালের একটি পর্বতে এখন তুষারই নেই। হ্রদ তৈরি হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বাইরে নয় পর্বত। তরুণদের তিনটি এম- মাসল, মাইন্ডসেট এবং মানি থাকলে পর্বতারোহন সম্ভব। ধাপে ধাপে যেতে হবে। সিঁড়ির কোনো ধাপ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। ধীরে ধীরে এগোতে হবে। পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে সব ধাপ পেরোনো সহজ।
তিনি বলেন, অন্নপূর্ণা সামিটে আমাদের দলে চারজন ছিলাম। বাকি তিনজন সামিট করতে পারেনি। একজনকে হেলিকপ্টারে রেসকিউ করতে হয়েছে। আমি ভাগ্যবান। অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসেছি। প্রথম যিনি এ পর্বত সামিট করেছিল তার হাত পায়ের সব আঙুলের ডগা হারিয়েছিলেন। আমিও খুব সচেতন ছিলাম। একসময় আমার এ আঙুল খুব কালো হতে শুরু করেছিল। আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। ভাগ্য ভালো খারাপ কিছু হয়নি। এ পর্বত খুব তুষারধস প্রবণ। এ বছরটাকে বলা হচ্ছে অন্নপূর্ণার সবচেয়ে ভালো সিজন। কারণ কম পরিমাণে তুষারপাত হয়েছে। আমরা যখন সামিট করছি তখন প্রচুর তুষারপাত শুরু হলো। ঝুঁকি বাড়লো। নীল বরফ ছিল পাথরের চেয়েও শক্ত।
২০২৩ সালে রাজস্থানের এক ছেলে অন্নপূর্ণার তুষার ফাটলে আটকা পড়েছিলেন। তিন দিন আটকা ছিল। তার বেঁচে ফেরাকে মিরাকল বলা হয়।
বক্তব্য দেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের পরিচালক ব্রুনো লাক্রামপ, ভিজুয়াল নিটওয়ারসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ নূর ফয়সাল, ভার্টিকাল ড্রিম ক্লাবের সভাপতি ফরহান জামান প্রমুখ।
২০২২ সালে ৭ হাজার ফুট উচ্চতার পর্বত সামিট করেন বাবর। ২০২৪ সালে এভারেস্ট ও লোৎসে সামিট করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৫
এআর/টিসি