ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কয়েদির পোশাকে চট্টগ্রাম ছাড়লেন নিজামী-বাবর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৪
কয়েদির পোশাকে চট্টগ্রাম ছাড়লেন নিজামী-বাবর

চট্টগ্রাম: চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় জামায়াতের আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুফুজ্জামান বাবরসহ  মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজনকে কয়েদির পোশাক পরিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

 

বাকি দু’জন হচ্ছেন এনএসআই’র সাবেক দু’মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম।

 

শনিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে তাদের নিয়ে একটি প্রিজন ভ্যান কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসময় চারজনের শরীরে ছিল কয়েদির পোশাক।

তাদের বিমর্ষ এবং ক্লান্ত দেখা গেছে। বাবর ছাড়া আর কেউ কোন কথা বলেননি।

 

বাবর উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন, সবাই ভাল থাকবেন। দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেন। ’

 

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার রফিকুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, ‘চারজনের বিরুদ্ধে আরও মামলা বিচারাধীন আছে। এসব মামলায় হাজিরার জন্য তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ’

 

একই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরও ৮ জন আসামী বর্তমানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে আছে বলে জানান রফিকুল কাদের।

 

উল্লেখ্য মতিউর রহমান নিজামী, লুৎফুজ্জামান বাবর, রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন আছে।

 

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় ১৪ আসামীর মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে তাদের পাঁচ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

 

একই ঘটনায় অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া আরেক মামলায় ১৪ জনকে যাবজ্জীবন এবং আরও সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

 

সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, জামায়াতের আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা’র সামরিক কমাণ্ডার পরেশ বড়ুয়া, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নূরুল আমিন, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) অবসরপ্রাপ্ত উইং কমাণ্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআই’র সাবেক উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, এনএসআই’র সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সিইউএফএল’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার,  সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজী আবদুস সোবহান।  

এদের মধ্যে পরেশ বড়ুয়া ও  নূরুল আমিন পলাতক আছেন।
 

বাকি আসামীদের রায় ঘোষণার দিন দুপুরে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাবার পরই কনডেম সেলে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি নিজামী, বাবর, রেজ্জাকুল ও আব্দুর রহিমের ডিভিশন বাতিল করে কারা কর্তৃপক্ষ।  
 

রায়ের দিন রাত সোয়া ৮টার দিকে চট্টগ্রাম আদালত থেকে বন্দি ১২ আসামীর সাজা পরোয়ানা নিয়ে কারাগারে যান বিচারিক ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মো.ওমর ফুয়াদ।

 

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১,২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।