চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সাংসদ ড.আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর উপর হামলার ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের তিন হাজার নেতাকর্মীকে আসামী করে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলার এজাহারে জামায়াত দলীয় সাবেক সাংসদ আ ন ম শামসুল ইসলামসহ ১২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে লোহাগাড়া থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ০১ (০১) ২০১৪।
লোহাগাড়া থানার ওসি মো.শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় শামসুল ইসলামসহ ১২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আরও তিন হাজার অজ্ঞাতনামা লোককে আসামী করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাতভর লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ২২ কর্মীকে আটক করে। তাদের সাংসদের উপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের শাহ মঞ্জিল এলাকায় ১৯ দিনব্যাপী সিরাতুন্নবী মাহফিলের শেষদিনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন সাংসদ ড.আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী। একই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন সাতকানিয়ার বাসিন্দা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলাম আমিন। প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব জয়নাল আবেদিনও একই মাহফিলে ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মাহফিলে আমিনুল ইসলাম নির্বিঘ্নে বক্তব্য শেষ করে মঞ্চ থেকে নেমে যাবার পর সেখানে হাজির হন সাংসদ নদভী। তিনি মঞ্চে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই জামায়াত-শিবিরের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জড়ো হয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। এসময় তারা সাংসদের দিকে ইট,পাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। বাধ্য হয়ে সাংসদ পাশের একটি মসজিদে আশ্রয় নেন। রাতে পুলিশ গিয়ে সাংসদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যান।
সাংসদের অনুসারীদের দাবি, এলাকায় সাবেক সাংসদ ও নগর জামায়াতের আমির আ ন ম শামসুল ইসলামের অনুসারীরাই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সাংসদ ড.আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বাংলানিউজকে বলেন, ‘সীরাতুন্নবী মাহফিল কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী নয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছিল সেটি। আমি কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে যাইনি, মাহফিলে গিয়েছিলাম। যারা হামলা করেছে তারা ধর্মীয় ওই অনুষ্ঠানকে কলংকিত করেছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজনীতি টেনে আনা তাদের উচিৎ হয়নি।
জামায়াতের ‘কাছের লোক’ হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কহীন নদভী চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসন থেকে গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে অনেকেই বিস্মিত হন।
জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নদভী নির্বাচনের পর এক সংবর্ধনা সভায় বলেন, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আগে পাকিস্তান ছিল। দীর্ঘদিন পর সেটা স্বাধীন হয়েছে।
জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছেড়ে আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া নদভী জামায়াত-শিবিরের তোপের মুখে আছেন। এছাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের একাংশও নদভীকে সহজভাবে গ্রহণ করেনি বলে আলোচনা আছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১,২০১৪