চট্টগ্রাম: শিক্ষার্থীদের মারামারি-হানাহানি থেকে দূরে রাখতে তাদের সাংস্কৃতিক বোধে উদ্বুদ্ধ করার জন্য শিক্ষকদের আহ্বান জানালেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহতসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখন অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে তখন চট্টগ্রামে এক সেমিনারে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকরা যদি শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করেন তবে তারা আর খারাপ লিপ্ত হবে না। একজন শিক্ষার্থী যদি নাটক করতে ভালোবাসে, তবে সে সেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকবে, ভাংচুর-মারামরির চিন্তা তার মাথায় আসবে না।
প্রচলিত গতানুগতিক শিক্ষায় আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা গড়া যাবে না মন্তব্য করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হবে জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করা। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার এ লক্ষ্যেই আমরা শিক্ষার গুণগত ও আমুল পরিবর্তন চাই। যাতে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব উপযোগী নতুন প্রজন্ম তৈরিই এর প্রধান উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিরোধের মুখে পড়েনি এমন কোন শিক্ষানীতি হয়নি। কিন্তু আমাদেরটার কোন প্রতিবাদ হয়নি। কারণ আমরা কোন দলীয় নীতি করেনি, শিক্ষানীতি করেছি।
শিক্ষকদের সৃজনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ক্লাসে গিয়ে কেবল গতানুগতিক পাঠদান করলে হবে না। আপনাদের মৌলিকতা এবং সৃজনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। তবেই শিক্ষার্থীরা যথার্থ উপকৃত হবে।
বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) আন্তঃব্যাচ সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সুমন বড়ুয়ার সঞ্চালনায় ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস প্রসঙ্গ শিক্ষা ও শিক্ষক‘ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) সমিতির নির্বাহী সদস্য আবদুল মুবিন।
অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, একসময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল জ্ঞাণ সৃষ্টির জায়গা। কলেজগুলোতেও গবেষণায় খ্যাত হয়েছেন এ ধরণের অনেক শিক্ষক ছিল। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষা জ্ঞান চর্চা থেকে বিযুক্ত হয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি বলেন, নিজেদের অজান্তেই আমরা তরুণদের পরীক্ষা-ডিগ্রি আর সার্টিফিকেটের জালে আটকে দিয়েছি। উন্নত মহৎ জীবনের কোন স্বপ্ন তাদের দেখাতে পারছি না। শিক্ষার্থীদের যদি ইতিবাচক কাজে লাগাতে না পারি তবে আমাদের জন্য বড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শেখর দস্তিদার, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার, বিসিএস আন্তব্যাচ সমন্বয় কমিটির আহ্বায় শাহিদুল খবির চৌধুরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৪
** শিক্ষামন্ত্রীর অনুষ্ঠানকে ঘিরে ছাত্রলীগ-শিবির উত্তেজনা
** বিশ্বে শিক্ষায় বাজেট বাড়ছে, আমাদের কমছে: শিক্ষামন্ত্রী