ঢাকা, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সরকারি বাসভবন নেই নগরপিতার

আবদুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৪
সরকারি বাসভবন নেই নগরপিতার

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে সরকারি বাসভবন। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় থাকা সিটি করপোরেশনের মেয়রের জন্য কোন বাসভবন নেই।



সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নগরীর টাইগার পাস এলাকায় বাসভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও আইনি জটিলতায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম মনজুর আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সিডিএ চেয়ারম্যান, বন্দর চেয়ারম্যান, রেলওয়ের মহা ব্যবস্থাপকসহ সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সরকারি বাসভবন রয়েছে।
কিন্তু মেয়রের কোন সরকারি বাসভবন নেই। প্রথমবারের মতো মেয়রের বাংলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু  মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে তা বন্ধ রয়েছে। ’

তিনি বলেন,‘শুধু আমার জন্য নয়, যিনিই মেয়র নির্বাচিত হবেন তার জন্য নগর ভবনের কাছাকাছি বাসভবন খুবই প্রয়োজন। এখন আমার বাসা থেকে নগর ভবনে আসতে সময় লাগে প্রায় ৪৫ মিনিট। যানজট থাকলে এক ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। ’

করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নগরীর টাইগারপাস এলাকায় মেয়রের জন্য একটি বাংলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আড়াইতলা ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা। কাজও শুরু করা হয়।

২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন পরিবেশবাদি সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী।

একই বছরের ৭ অক্টোবর রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের আদালত বাংলো নির্মাণের উপর স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। পরবর্তীতে শুনানি শেষে রিটটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগেও শুনানি শেষে রিটটি খারিজ করে দেওয়া হয়।

২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর একই সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়।
 
গত ‍রোববার রিট আবেদনটির প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক সপ্তাহের জন্য নির্মাণ কাজের উপর আবারও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নিদের্শ দেন।  

রিট আবেদনে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে পাহাড় কেটে মেয়র বাংলো নির্মাণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন,‘‘মেয়র বাংলো নির্মাণে কোন পাহাড় কাটা হয়নি। এটি রেলওয়ের একটি তিনতলা বাসভবন ছিল। মেয়র বাংলো নির্মাণের জন্য বাসভবনটি রেলওয়ে থেকে নিলামে নেওয়া হয়। শুধুমাত্র ভবনটি ভেঙ্গে আমরা একই স্থানে আরেকটি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। ’’

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,‘আগে থেকে সেখানে একটি ভবন থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করা হয়নি। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্যও আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি ও আইনি জটিলতা শেষ হলে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। ’

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. শহীদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘পাহাড়ে কোন স্থাপনা করতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের অবস্থানগত ছাড়পত্রের প্রয়োজন রয়েছে। সিটি করপোরেশন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছে। হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা থাকায় কাজ বন্ধ রাখতে ৪ ডিসেম্বর করপোরেশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা তুলে নিলে যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।