ঢাকা, বুধবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তিন ঘণ্টা পর ছাত্রলীগের অবরোধ প্রত্যাহার

চবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৪
তিন ঘণ্টা পর ছাত্রলীগের অবরোধ প্রত্যাহার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অবরোধের মুখে তিনঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হয়েছেন উপাচার‌্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ।

সোমবার বিকেল তিনটা থেকে পাঁচটা পর‌্যন্ত নিজ কার‌্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকেন উপাচারর‌্য।


 
ছাত্রলীগ কর্মী তাপস সরকারের খুনিদের গ্রেফতার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ উদ দৌলাহ এর অপসারণের দাবিতে উপাচার‌্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন সিএফসির কর্মীরা। সিএফসি নিয়ন্ত্রন করে ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি অমিত কুমার বসু ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সুমন মামুন।


প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় সিএফসির কর্মীরা।   তারা মূল ফটকেও তালা লাগিয়ে দেয় । প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালনের সময়  ছাত্রলীগ কর্মীরা উপাচার‌্যকে ছাত্রলীগ কর্মী তাপস সরকারের খুনিদের গ্রেফতার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ উদ দৌলাহ এর অপসারণের জন্য বেলা একটা পর‌্যন্ত সময় বেঁধে দেন।

বেলা দুইটা থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের দাবি বাস্তবায়নে উপাচার‌্যকে অবরুদ্ধ করে।

এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রক্টরের পদত্যাগসহ বিভিন্ন ম্লোগান দিতে থাকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার‌্য এর প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে বিকেল পাঁচটার দিকে অবস্থান কর্মসূচী প্রত্যাহার করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি অমিত কুমার বসু বাংলানিউজকে বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার‌্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ স্যার আমাদেরকে দুই দিনের মধ্যে প্রক্টরের অপসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং আজকে মামলার ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলেছেন। তাই আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচী প্রত্যাহার করেছি। এরমধ্যে যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয় তবে আমরা পুনরায় কর্মসূচী ঘোষণা করব।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার‌্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ বাংলানিউজকে জানান,আমি দুইদিনের মধ্যে প্রক্টরের পদত্যাগের ব্যাপারে কোন প্রতিশ্রুতি দেইনি। আমি একজন শিক্ষককে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি কারো কথায় তাকে(প্রক্টর) অপসারণ করতে পারি না।   তবে তাপস সরকার নিহত হওয়ার ঘটনায় যদি প্রক্টরের কোন গাফেলতি ও সম্পৃক্ততা থাকে তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করব। আর মামলার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।

ছাত্রলীগের  দাবি সম্পর্কে জানে না প্রক্টর :

সোমবার সকাল থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অপসারণের দাবি করে আসলেও এ ব্যাপারে কিছু জানে না বলে জানান প্রক্টর মো.সিরাজ উদ দৌলাহ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন,ছাত্রলীগের কিছু কর্মী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করেছিল। পরে তারা সেখান থেকে চলে যান। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি শান্ত আছে।

ছাত্রলীগ কেন আপনার অপসারণ দাবি করছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,ছাত্রলীগের দাবি সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।

তাপসের মৃত্যুতে স্তব্ধ ক্যাম্পাস, আতংক কাটেনি শিক্ষার্থীদের:
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংষ্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাপস সরকারের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো ক্যাম্পাস। ক্লাস ও পরীক্ষা চালু থাকলেও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। অধিকাংশ বিভাগে সোমবার কোন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি।

তবে প্রশাসনিক ভবনে কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো আতংক কাটেনি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন ও র‌্যাবের টহল :

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মী নিহত হওয়ার পর সোমবার ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতয়ন করা হয়েছে।   তাছাড়া যেকোন পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসে র‌্যাব সদস্যলা টহল দিচ্ছে।
 
হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো.ইসমাইল বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। তাছাড়া র‌্যাব-৭ এর একটি টিম ক্যাম্পাসে মূল ফটকে অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ সময় : ১৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।