ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘লাশ নিয়ে রাজনীতি’

বিপ্লব পার্থ, চবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৪
‘লাশ নিয়ে রাজনীতি’

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হওয়ার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও বেশ কয়েকজনকে হত্যা মামলার আসামী করার অভিযোগ উঠেছে।

আসামীদের দাবি ঘটনার দিন  ক্যাম্পাসে না থাকলেও প্রতিহিংসামূলকভাবে তাদেরকে মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

  এটিকে তারা লাশ নিয়ে রাজনীতি বলে আখ্যায়িত করেছেন।    

ছাত্রলীগকর্মী তাপস সরকার নিহত হওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার তার বন্ধু হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
  মামলা নম্বর ১৭, এতে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামী করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন বাংলানিউজকে জানান, ‘আমি অক্টোবর মাস থেকে ক্যাম্পাসে নেই।   তাছাড়া গত তিন মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলাম না।   মামলায় আমার নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বললেও ঘটনার দিন আমি ঢাকায় ছিলাম।   কিন্তু মামলায় আমাকে ১১ নম্বর আসামী করা হয়েছে। তারা লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে। ’

সূত্র জানায়, মামলার ৯ নম্বর আসামী ছাত্রলীগের সাবেক উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সরোয়ার পারভেজ জনি ১২ ডিসেম্বর থেকে তার নিজবাড়ী হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে অবস্থান করছেন।   ১১ নম্বর আসামী হাবিবুর রহমান রবিন গত ১ অক্টোবর থেকে ক্যাম্পাসে আসেন না। অন্যদিকে মামলার ৪ নম্বর আসামী ফরহাদ হোসেন চাকরি করেন আবুল খায়ের কোম্পানীতে সেলস ম্যানেজার হিসেবে।   ঘটনার দিন তিনি ছিলেন কর্মস্থলে।

মামলায় ১৪ থেকে ১৮ নম্বর আসামীদের হুকুমদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।   তারাও ঘটনার দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছিলেন না।   এদের মধ্যে ১৪ নম্বর আসামী সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আরিফুল ইসলাম ঘটনার দিন চট্টগ্রাম শহরে ছিলেন, ১৫ নম্বর আসামী সাবেক দফতর সম্পাদক জালাল আহমেদ ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকায় অবস্থান করছেন, ১৬ নম্বর আসামী সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ১ ডিসেম্বর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন।

এ ব্যাপারে মামলার ৪ নম্বর আসামী ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি গত তিন মাস যাবৎ আবুল খায়ের কোম্পানীতে চাকরি করছি।   অনেকদিন হলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নেই।   ঘটনার দিন আমি কাঠিরহাট এলাকায় ছিলাম। হয়রানি করার জন্য এ মিথ্যা মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছে।   

মামলার বাদী হাফিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার দিন আসামী সবাইকে একসঙ্গে দেখিনি।   পরে পুলিশ ও আমাদের নেতাকর্মীদের সহায়তায় জেনে তাদেরকে মামলায় আসামী করা হয়েছে।   এরমধ্যে দু’একজনের প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহন না থাকলেও্ পরোক্ষভাবে ছিল।

হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।   যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তদন্ত করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। নিরাপরাধ কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করবে না।

চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক দফতর সম্পাদক জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হোক। কিন্তু যখন ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত আমিসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়, তখন এটি যে মিথ্যা মামলা তা সহজে বুঝা যায়।   এজন্য সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।

গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে চবিতে শাহ আমানত হলের সামনে নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারী ছাত্রলীগের দু’পক্ষ ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) ও চ্যুজ ফ্রেন্ড উইথ কেয়ার (সিএফসি)’র কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।   এক পক্ষের নেতার ছোঁড়া গুলিতে খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাপস সরকার।   সিএফসি তাপসকে তাদের কর্মী বলে দাবি করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।