ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘শিয়া-সুন্নীর ঝগড়ায় আমরা যাবনা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
‘শিয়া-সুন্নীর ঝগড়ায় আমরা যাবনা’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ৩৪টি দেশের জোটে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার বিষয়ে নেতিবাচক মতামত দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের বর্ষীয়ান নেতা ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার বিজয় মঞ্চে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মতামত দেন।



সুরঞ্জিত বলেন, ‘সৌদিআরবের সঙ্গে নাকি নতুন কি এক জোট ফোট হচ্ছে।   আমাদের পররাষ্ট্র নীতি কি হবে সেটা সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে।
  জাতির জনক আমাদের শুধু স্বাধীন দেশ আর পতাকাই দিয়ে যান নাই, একটা সংবিধানও দিয়ে গেছেন।   সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে, আমরা শান্তির পক্ষে যাব, যুদ্ধের পক্ষে যাবনা। ’

‘স্পষ্ট করে বলতে চাই শিয়া-সুন্নীর ঝগড়ায় আমরা যাবনা। আশা করি মানুষের অনুভূতি জননেত্রী বুঝবেন। এমন কিছু হবেনা যা শান্তির বিপক্ষে যাবে। আমরা উত্তেজনা চাইনা।   আমরা শান্তির পক্ষে থাকার লোক। ’ বলেন সুরঞ্জিত।

তিনি বলেন, আমরা সৎ প্রতিবেশিসুলভ আচরণ করব।   সবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থাকবে।   যারা বন্ধুপ্রতিম আছে, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে আমরা তাদের সঙ্গে একসঙ্গে চলতে চাই।

দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির পর পাকিস্তানের ঔদ্ধর্তের বিরুদ্ধে সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘নমনীয়’ অবস্থানেরও সমালোচনা করেছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত।

তিনি বলেন, দেশে প্রতিবিপ্লবী শক্তি কোণঠাসা।   বিপ্লবী শক্তি আজ ক্ষমতায়।   অথচ দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকরের পর পাকিস্তান যে ঔর্দ্ধত্য দেখিয়েছে জাতির প্রত্যাশা ছিল সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে একটা শক্ত জবাব আসবে।   কিন্তু সেটা কি এসেছে ? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে আমরা চিন্তাভাবনা করে দেখি।   আরে পাকিস্তানের বিষয়ে এত চিন্তাভাবনা কিসের ?

‘পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন না করেন, ঠিক আছে।   কিন্তু পাকিস্তানের আমাদের যে রাষ্ট্রদূত আছে তারে ফিরিয়ে আনেন। ’ বলেন সুরঞ্জিত।

পৌর নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে সুরঞ্জিত বলেন, বিএনপির নেতারা কথায় কথায় নির্বাচন কমিশনকে গালি দিচ্ছে।   নির্বাচন কমিশন কি করছে ? নির্বাচন কমিশন আমাদের সরকারি দলের এমপিদের পর্যন্ত এলাকায় যেতে দিচ্ছেনা।   বিএনপির নেতারা তো লুঙ্গি তুলে এলাকায় দৌঁড়াচ্ছেন।   অথচ আমরা এলাকায় যেতে পারছিনা।   তবুও আমরা কিছু বলছিনা।   আমরা চাই একটা নির্বাচন হোক।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের আইএসআই এবং আপনি দিনরাত দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।   কিন্তু বেগম জিয়া যতই স্বপ্ন দেখুক পাকিস্তানের সমর্থন নিয়ে তিনি আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।   স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তান দর্শনের দল নিয়ে ক্ষমতায় আসার দরজা বন্ধ হয়ে গেছে।  

বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার দিন, আপনার রাজনীতি শেষ।   আমাদের দিন শুরু।   বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে আপনাকে মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান জয় বাংলা বলেই রাজনীতি করতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান ও জহিরুল হক মৃধা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড.আনোয়ারুল আজিম আরিফ এবং নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইন্দুনন্দন দত্ত।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
আরডিজি/টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।