ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শ্রমিকলীগের ভাংচুর: একদিন পরও মামলা হয়নি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৭
শ্রমিকলীগের ভাংচুর: একদিন পরও মামলা হয়নি

চট্টগ্রাম: বান্দরবানে পিকনিকে গিয়ে মাতলামি, পর্যটকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ এবং জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তার উপর হামলার পর বিতাড়িত হয়ে চট্টগ্রাম স্টেশনে ভাংচুরের ঘটনার একদিন পরও জড়িত শ্রমিকলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলছেন, ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক-কর্মচারীরা সরকার দলীয় সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে মামলার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে রেলওয়ে জেনারেল ও সাবসিডারি রুলস’র ১৮১ ধারা অনুযায়ী হামলার ঘটনাটি ধর্তব্যমূলক অপরাধ।

এ হিসেবে জড়িত কর্মচারীদের চাকরি থেকে বিহস্কারের বিধান রয়েছে।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বান্দরবানের মেঘলায় পিকনিকে গিয়ে মাতলামি এবং পর্যটকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে পর্যটন এলাকা থেকে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীদের বের করে গাড়িতে তুলে দেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

চট্টগ্রাম পৌঁছে এ ঘটনার প্রতিবাদে হামলা চালিয়ে রেল ষ্টেশনে ব্যাপক ভাংচুর করে শ্রমিক লীগ নেতাকর্মীরা। এসময় তারা রেল ষ্টেশনের টিকেট কাউন্টার এবং ষ্টেশনে প্রবেশ পথের কাঁচ ভাংচুর করে বিক্ষোভ মিছিলও করে। টিকেট নিতে আসা যাত্রীদের ধাওয়া দিয়ে রাত সাডে ১০টা পর্যন্ত ট্রেন অবরোধ করে। এতে রাতের দুটি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন ছেড়ে যেতে পারেনি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের হিসাব বিভাগের অডিটর ও শ্রমিক লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায়। যা চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার(ডিআরএম) মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত কর্মচারীরা সরকার দলীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে এ বিষয়ে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

ভাংচুরের ঘটনায় খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন ছাড়তে পারবো কিনা তা নিয়ে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু ঢাকাগামী দুটি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে।

ডিআরএম ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে গেছে বলে দাবি করলেও মন্ত্রণালয়ে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রাম মেইল এবং তূর্ণা নীশিতা নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি।

রেলওয়ে থানার ওসি শহিদুল ইসলামের ধারণা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকলীগের সঙ্গে সমঝোতা করার কারণে থানায় অভিযোগ করা হয়নি। তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত স্টেশনে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ফিরোজ সালাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, শ্রমিকলীগের নেতা-কর্মীদের বাধার কারণে শুক্রবার রাতে দুটি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে ছাড়তে পারেনি বলে আমাকে জানানো হয়েছে।

ভাংচুরের ঘটনায় মামলা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাংচুরের বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে চাকরি বিধিমালা ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভাংচুরের বিষয়ে অবগত নয় জানিয়ে রেলওয়ে শ্রমিকলীগের কেন্দ্রিয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানের ঘটনায় শ্রমিক-কর্মচারীরা চট্টগ্রাম স্টেশনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বলে শুনেছি। তবে হামলা, ভাংচুর এবং রেলের সম্পদ হানির মতো কর্মকাণ্ড আমরা সমর্থন করি না।  

ভাংচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিকলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা হামলা বা ভাংচুর করিনি। স্টেশনে প্রবেশ করার সময় একটি গ্লাস ভেঙে গেছে। এটা আগে থেকেই ভাঙা ছিল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।