ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তিন ভাইয়ের পেশা চুরি! 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
তিন ভাইয়ের পেশা চুরি!  মো. মঈনুদ্দিন, মো. রহিম ও মো. জাহাঙ্গীর।

চট্টগ্রাম: আপন তিন ভাই। মো. মঈনুদ্দিন, মো. রহিম ও মো. জাহাঙ্গীর।

পেশা তাদের চুরি করা। বিশেষ করে গ্রিল কেটে বাসার দামি পণ্যসামগ্রীর প্রতি বেশি নজর দেন তারা।
 এক ভাই গভীর রাতের রিকশাচালক। রিকশা চালিয়ে সন্ধান করতেন কোথায় চুরি করা যায়। অবশেষে তারা গ্রেফতার হয়েছেন পুলিশের হাতে।

জানা গেছে, নগরের জামালখান এলাকার মাহাবুব হিলস ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্লাটে থাকেন আবরারা বেগম। গত গত ১১ অক্টোবর তার বেড রুমের গ্রিল কেটে ৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, ৩ হাজার ১০০ ইউএস ডলার, ৩৫টি ডায়মন্ডের রিং, ৪ জোড়া ডায়মন্ডের কানের দুল, ৫টি ডায়মন্ড মেশানো স্বর্ণের ব্রেসলেট চুরি করে নিয়ে যায়। পরে আবরারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর পরই অভিযানে নামে টিম কোতোয়ালি।  

এর আগে গত ১৩ অক্টোবর নগরের পুরাতন বিমান অফিসের সামনে থেকে আসামি ইব্রাহীমকে গ্রেফতার করেন তারা। এরপর ইব্রাহীমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এক নাম্বার আসামি মো. মঈনুদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। মঈনুদ্দিন পুলিশের কাছে চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন। তাকে নিয়ে চোরাই পণ্য উদ্ধারে অভিযানে যায় পুলিশ।  

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বাবলু কুমার পাল, এসআই মো. মোমিনুল হাসান, এএসআই অনুপ কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে অভিযানে আসামিদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৭০০ ইউএস ডলার, ১৫টি ডায়মন্ডের হাতের রিং, ৪ জোড়া ডায়মন্ডের কানের দুল, ১টি ডায়মন্ডের নাকের নথ, ১টি স্বর্ণের গলার চেন, ১টি ডায়মন্ডের ব্রেসলেট, ১টি ডায়মন্ডের চুলের ক্লিপ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার হয়েছেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মো. মঈনুদ্দিন প্রকাশ মাইন উদ্দিন প্রকাশ মনির (৩২), মোছাম্মৎ নয়নতারা আক্তার (২১), চট্টগ্রাম জেলার মো. রহিম (৩০) ও মো. জাহাঙ্গীর (৩০)।  

১ নম্বর আসামি নগরের কোতোয়ালী থানায় চুরির অপরাধে ২ বার, ছিনতাই ও নারী নির্যাতন করার অপরাধে ২বারসহ ৪ বার গ্রেফতার হয়েছেন। ৩ নম্বর আসামি চকবাজার থানায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে ১ বার গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, ৪ নম্বর আসামি একজন রিকশাচালক। সে অন্য আসামিদের নিয়ে প্রায়সময়ই রাতের বেলায় রিকশা নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরে। ১ নম্বর আসামি মো. মঈনুদ্দিন প্রকাশ মাইন উদ্দিন প্রকাশ মনির (৩২) রিকশা থেকে নেমে যে বাসায় অন্ধকার দেখে সে বাসার পেছন দিকে পাইপ বেয়ে উঠে জানালা থাকলে জানালার গ্রিল বাঁকা করে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে। এরপর মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিচে নেমে আসে।

৩ নম্বর আসামি রহিম (৩০) এবং ৪ নম্বর আসামি মো. জাহাঙ্গীর (৩০) এলাকা পাহারা দেয়। ৪ নম্বর আসামি মো. জাহাঙ্গীর (৩০) ইতিপূর্বে ছিনতাইয়ের মামলায় ৮ বছর সাজা ভোগ করে কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হয়। সে কারাগার থেকে বেরিয়ে ছিনতাই ছেড়ে দিয়ে চুরির পেশায় জড়িয়ে পড়ে। ১ নম্বর আসামি অত্যন্ত শক্তিশালী। সে হাত ও পায়ের সাহায্যে যেকোনো বাসার জানালার গ্রিল বাঁকা করে ফেলতে পারে। সে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।