ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সেই মিনুর অনাথ সন্তানদের জন্য কেএসআরএমের চেক হস্তান্তর

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
সেই মিনুর অনাথ সন্তানদের জন্য কেএসআরএমের চেক হস্তান্তর চেক হস্তান্তর করেন কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম

চট্টগ্রাম: অন্যের হয়ে জেল খাটা সেই মিনুর হতভাগ্য সন্তানদের ভরণপোষণে অর্থসহায়তা দিয়েছে দেশের অন্যতম ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সুমনী আক্তার।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, কেএসআরএমের এই মহৎ উদ্যোগ অনুকরণীয়।

মিনুর সন্তানদের তেমন কোনো অভিভাবক নেই। মামা থাকলেও ভরসা রাখা যাচ্ছে না। তাই বিষয়টা নিয়ে আমাদের এগুতে হচ্ছে সতর্কভাবে। আমরা চাই তারা যেন বঞ্চিত না হয় কোনো প্রাপ্যতা থেকে। এই টাকা তাদের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখা হবে।

এডিএম সুমনী আক্তার বলেন, দুই শিশুকে এসওএস শিশু পল্লীতে ভর্তি করানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সেখানে অনাথ শিশুদের পড়ালেখা ও ভরণপোষণে টাকার প্রয়োজন হয় না। তাই কেএসআরএম থেকে দেওয়া অর্থ ওই শিশুদের নামে ব্যাংকে রাখা হবে। তা ভবিষ্যতে তাদের কাজে আসবে।  

কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে হতভাগ্য মিনু ও তার সন্তানদের দুর্দশা ও ভাগ্য বিড়ম্বনার কথা জেনে প্রতিষ্ঠানের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার। সেই হিসেবে জেলা প্রশাসকের কাছে দুই সন্তানের জন্য অনুদানের চেক হস্তাস্তর করা হয়েছে।

জানা যায়, স্বামী পরিত্যক্ত হতভাগ্য মিনু আক্তার তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের আশ্বাসে অন্যের হয়ে কারাগারে যান। কথা ছিল অল্পদিনের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কিন্তু প্রায় ৩ বছর অতিবাহিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবীসহ কিছু মহানুভব মানুষের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে মিনু ২০২১ সালের ১৬ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর মধ্যে মারা যায় মিনুর কন্যসন্তান জান্নাত। কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় জীবন থেকে মুক্তি পান মিনু। ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায় মিনুকে গাড়ি চাপা দেওয়া হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।  

খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ২৯ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিনু। কোনো পরিচয় না পাওয়ায় এক দিন পরে অজ্ঞাত হিসেবে তার মরদেহ দাফন করে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম। ৩ জুলাই রাতে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয় যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি মিনুর। এরই মধ্যে মিনুর বড় ছেলে অর্থাভাবে চাকরি নেয় ষোলশহর চায়ের দোকানে। মিনুর মৃত্যুর পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় বড় ছেলে ইয়াসিন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে টনক নড়ে প্রশাসনের। পুলিশের তৎপরতায় খোঁজ মেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারব ১০,২০২১
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।