ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

এক অফিসেই শিক্ষা কর্মকর্তার ৯ বছর

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
এক অফিসেই শিক্ষা কর্মকর্তার ৯ বছর ...

চট্টগ্রাম: সরকারি চাকরিতে তিন বছর পর পর বদলির নিয়ম থাকলেও হাটহাজারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। তিনি শুধু হাটহাজারীতেই এক মেয়াদে তিন বছর এবং বদলি ঠেকিয়ে আরেক মেয়াদে ছয় বছর সহ মোট ৯ বছর হাটহাজারীতেই থেকে গেছেন।

 

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ফেনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. সাইদুর রহমানকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের  আদেশে হাটহাজারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়। হাটহাজারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সায়েদা আলমকে বদলি করা হয় বোয়ালখালী উপজেলায়।

কিন্তু সংশ্লিষ্ট দফতরে তার তদবিরে ২ মার্চ এ আদেশ বাতিল করা হয়।

জানা গেছে, সায়েদা আলম ২০০৮ সালের ৭ জুলাই হাটহাজারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। প্রায় তিন বছর দায়িত্ব পালন শেষে তিনি বদলি ঠেকিয়ে ২০১৫ সাল থেকে আবারও হাটহাজারীতে চলে আসেন। প্রায় ৯ বছর এই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন স্বেচ্ছাচারী। তার বিরুদ্ধে উঠেছে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ব্যানার ও পতাকা তৈরির নামে বিদ্যালয়গুলো থেকে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। এনিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে  সমালোচনা।  

সম্প্রতি হাটহাজারীতে শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও এক শিক্ষকের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠে। উপজেলার পূর্ব পেশকার বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণতোষ কান্তি বড়ুয়া স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর নকল করেন। এ ঘটনায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলমগীর ‘প্রধান শিক্ষক কর্তৃক স্বাক্ষর জালিয়াতি প্রসঙ্গে’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

জানা যায়, প্রধান শিক্ষক রণতোষ কান্তি বড়ুয়া শিক্ষকদের বেতন-ভাতা স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন। তাছাড়া স্কুলের রশিদের টাকার প্রজেক্টের কলামে ধাপে ধাপে সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় দুই লাখ টাকা এবং মাস্টার রোল কলামে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদা আলমের কাছে ভাউচার জমা দেন বলে অভিযোগ করেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলমগীর।  

তিনি বলেন, রণতোষ কান্তি বড়ুয়ার বিভিন্ন অনিয়ম ও আইনবহির্ভূত একাধিক ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় তিনি এমন অনিয়ম আর করবেন না মর্মে ম্যানেজিং কমিটি বরাবর মুচলেকা দিয়েছেন।

এদিকে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে হাটহাজারী উপজেলার ১৪৯টি স্কুল থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ৫ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে। ২০১৫ সালে উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ জমা পড়লেও তার তদন্ত হয়নি।  

এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সায়েদা আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার বদলি হয়েছিল। সেটি বাতিল হয়েছে। এখন আমি হাটহাজারীতেই আছি। আমি অসুস্থ, তাই কথা বলতে পারছি না’।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাটহাজারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সায়েদা আলমকে বোয়ালখালীতে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বদলির আদেশ বাতিল হয়েছে বলে শুনেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ৩ মার্চ, ২০২২
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।