চট্টগ্রাম: ষাটোর্ধ্ব রোকেয়া বেগম। দুই সপ্তাহ আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হন চমেক হাসপাতালে।
বরং এমন ঘটনা প্রতিদিন ঘটলেই যেন খুশি তারা। পা ফেলে দিতে হবে শুনে পরিবারের সদস্যদের যখন মাথায় বাজ পড়ার অবস্থা, তখন ওয়ার্ড বয়দের টাকা চাওয়ার উৎপাত যেন বাড়তি বিড়ম্বনা।
ওয়ার্ড থেকে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া কিংবা অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসককে সাহায্য সহযোগিতা করা সবখানে পদে পদে দিতে হয় খরচ। ওয়ার্ডবয়দের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় রোগীর স্বজনদের সঙ্গে চলে বাকবিতণ্ডা।
রোববার (২৪ এপ্রিল) গভীর রাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
হাসপাতালের চতুর্থ তলায় অপারেশন থিয়েটারে দেখা যায়, রোগীদের দীর্ঘ সারি। করিডোরে এক কোণায় রোকেয়া বেগম ছেলের সঙ্গে এক ওয়ার্ডবয়ের চলছে দর কষাকষি। অনিক নামে ওই ওয়ার্ডবয়ের চাহিদা ৭০০ টাকা হলেও স্বজনদের অনেক অনুরোধের মুখে ৪০০ টাকায় নিষ্পত্তি হয় বিষয়টি।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রোকেয়া বেগমের ছেলে শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত ১৪ দিন ধরে হাসপাতালে আছি। চিকিৎসকের আন্তরিকতা আছে। তবে ওয়ার্ডের আয়া ও ওয়ার্ড বয়দের টাকা দাবি রীতিমতো অত্যাচারের পর্যায়ে। অপারেশনের জন্য কয়েক হাজার টাকার ওষুধ কিনেছি। কোনো কাজ করাতে গেলে পদে পদে টাকা ঢালতে হয়। টাকা ছাড়া যেন ঘোরে না ট্রলির চাকা। টাকা না দিলে রোগীকে ফেলে রাখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
প্রায় একই অভিযোগ করেন অপারেশন থিয়েটারে অপেক্ষমাণ আরেক রোগীর স্বজন। জান্নাতুল ইসলাম নামে ওই নারী বাংলানিউজকে বলেন, দুপুর ১২টায় এসেছি। কিন্তু এখনো সেবা পাইনি। চিকিৎসকরা এসে কয়েকজনকে ডেকে নেন। কিন্তু ওয়ার্ডবয়রা টাকার বিনিময়ে তাদের পছন্দের লোকদের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে দেন। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয়নি।
হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়দের প্রকাশ্যে টাকা নেওয়ার বিষয় জানতে চমেক হাসপাতালে পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
এমআর/টিসি