ঢাকা, বুধবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কখনও পদের জন্য দৌড়াদৌড়ি করিনি: আ জ ম নাছির

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
কখনও পদের জন্য দৌড়াদৌড়ি করিনি: আ জ ম নাছির আ জ ম নাছির উদ্দীন

চট্টগ্রাম: আবু জাহেদ মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, যিনি আ জ ম নাছির উদ্দীন নামেই পরিচিত। দায়িত্ব পালন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পঞ্চম মেয়র হিসেবে।

এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক  হিসেবেও তিনি সফল।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ‘আমি কখনও পদের জন্য দৌড়াদৌড়ি করিনি।

আমার পদগুলো আপনা-আপনিই এসেছে।  কর্মী হিসেবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে, দলের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাওয়া। শুধু রাজনীতি নয়, রাজনীতির বাইরেও আমার বিশাল একটা কর্মযজ্ঞ আছে’।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার চিন্তাভাবনা আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এটা শুনতে কেমন যেন মনে হতে পারে। এখনকার বাস্তবতা হচ্ছে-সবার পদের জন্য প্রত্যাশা থাকে। আমি বিগত চসিক নির্বাচনে দলের পক্ষ হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরীর জন্য কাজ করেছি। এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের জন্য প্রচারণা চালিয়েছি। দলের প্রত্যেকটা কাজে আমি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করি’।

আ জ ম নাছির উদ্দীনের জন্ম চট্টগ্রামে। বাবা সৈয়দ মঈনুদ্দিন হোসাইন ও মা ফাতেমা জোহরা বেগম। তিনি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মকাণ্ডে জড়িত হন। যোগ দেন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মিছিলে। আশির দশকের শুরুতে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৭৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং নগর ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ১৯৮০ এবং ১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৮৩ এবং ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। পর পর দুইবার নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।

নগর আওয়ামী লীগের থানাভিত্তিক তদারকি কমিটি নিয়ে কেন্দ্রে পাঠানো অভিযোগের  বিষয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বড় একটা সংগঠনে চিন্তার ভিন্নতা থাকবে। নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে তখন অনেকে একই আসনে যোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টা চালায়। দলের নেতাকর্মী বা সাধারণ মানুষের কাছে যার গ্রহণযোগ্যতা নেই, সেও লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য নৈতিক, অনৈতিক অনেক পথ অবলম্বন করে।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত হলো, নির্বাচন  সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত ও গতিশীল করা। প্রায় প্রত্যেকটা জায়গায় প্রায় ১০০টার মতো ইউনিট সম্মেলন হয়েছে। এখানে কোনও ধরনের সমস্যা হয়নি। কিন্তু মাঠে না থেকে, দলীয় কার্যালয়ে না এসে, দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করে কেউ যদি অভিযোগ করে, তাহলে সেই অভিযোগের সত্যতা আছে কি-না সেটা ভাবতে হবে। আমি যেহেতু মহানগর আওয়ামীলীগের দায়িত্বে আছি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, সংগঠনকে শক্তিশালী করা-গতিশীল করা। আমি আমার দায়িত্বের প্রতি যত্নশীল আছি, সচেতন আছি এবং সেই হিসেবে আমি কাজগুলো করছি।

বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতি প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির বলেন,  ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে তাদের আন্দোলন মোকাবিলা করেছি। যেহেতু বাংলাদেশ একটা গণতান্ত্রিক দেশ এবং আমরা গণতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করি৷ আওয়ামী লীগও একটা গণতান্ত্রিক সংগঠন। সেক্ষেত্রে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিরও অধিকার আছে। বিএনপি আন্দোলন করতে পারে, মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে পারে এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করার অধিকার আছে। কিন্তু তারা যদি অনিয়মতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করে, অগণতান্ত্রিক পথ বেছে নেয় এবং মানুষের জানমাল নিয়ে যদি ছিনিমিনি খেলে তাহলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আমরাও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে রাজপথে মোকাবিলা করবো।  

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে ও মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত যেসব কার্যকলাপ করেছে সেটার জন্য অনুশোচনা করেনি বা অনুতপ্ত  হয়নি। সুতরাং তাদের সাথে যারা আঁতাত করে বা যারা জোট বেঁধে নির্বাচন করে, তাদের নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ। যারা ১৯৭১ সালে পরাজিত হয়েছিল, তারাই জাতির জনককে হত্যায় জড়িত ছিল-এটা প্রমাণিত। তারা ধর্মকে পুঁজি করে, ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করে। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনের পূর্বে বলা হয়েছিল, ‘আওয়ামীলীগকে ভোট দিলে মসজিদে আজান শোনা যাবে না, উলুধ্বনি শুনা যাবে’৷ এখন কি তা হচ্ছে? এটাই হলো বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি। মিথ্যাচার করা, অপপ্রচার করা, দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা, ষড়যন্ত্র করা তাদের কাজ।  

‘বিএনপি যদি সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতো তাহলে জামায়াতকে স্থান দিতো না। তাদের কর্মকাণ্ডই প্রমাণ করে, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না।  এজন্য হয়তো আমাদের আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে’ বলেন আ জ ম নাছির উদ্দীন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
এমআই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।