চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেছেন, সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হতাহতের পাশে দাঁড়াতে চট্টগ্রামবাসী যেভাবে ছুটে এসেছেন সেটি সারাদেশে নজির স্থাপন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চট্টগ্রামবাসীর এ আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছেন।
সোমবার (২০ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অনাকাঙ্ক্ষিত অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাত দশটার দিকে এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হন।
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামের মানুষ দল মত নির্বিশেষে সবাই ছুটে এসেছেন। আমি দেশের সাতটি জেলায় দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু চট্টগ্রামের মানুষের মতো এমন আন্তরিক কোথাও দেখিনি। দেশবাসী বীর চট্টলার আন্তরিকতা দেখেছে।
বিএম কনটেইনার ডিপোর ঘটনায় সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনারা সঠিক সংবাদটি প্রকাশ করেছেন। তার জন্য কৃতজ্ঞতা। আপনারা যদি সঠিক সংবাদ প্রকাশ না করতেন তাহলে কুচক্রীমহল এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার সুযোগ পেতো।
জেলা প্রশাসক বলেন, যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারে যদি কেউ কর্মক্ষম থাকে তাহলে তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। যাদের পরিবারে কর্মক্ষম কেউ নেই তাদের জন্য অন্য কোনও ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তারা চলতে পারেন। বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত যে কথাগুলো বলেছেন, সব কথা তারা রক্ষা করেছেন। বাকি কথাগুলোও আশা করি রক্ষা করবেন।
এ সময় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বিএম ডিপোতে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সবাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সসহ সেবা সংশ্লিষ্ট সবাই যে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন সেটি অতুলনীয়। যতদিন আপনারা ব্যবসা করবেন ততদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মরণ রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, যারা হতাহত হয়েছেন তাদের পরিবারে যদি চাকরি করতে সক্ষম কেউ থাকে তাকে চাকরি দেন। আর্থিক অনুদান আপনারা পাচ্ছেন, সেগুলো কাজে লাগাবেন। কাউকে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় দিবেন না। রিকশা অথবা অন্যকিছু কিনে কাউকে চালাতে দেন। যাতে মূলধন ঠিক থাকে। বিএম কনটেইনার ডিপোর ঘটনায় যারা এগিয়ে এসেছেন, তাদের কাছে চট্টগ্রামের মানুষ কৃতজ্ঞ।
এ সময় বক্তব্য দেন বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক আজিজুর রহমান ও শফিকুর রহমান, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কবির, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।
উল্লেখ্য, বিএম কনটেইনার ডিপোর চেয়ারম্যান বার্ট প্রঙ্ক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। পরিচালক হিসেবে আছেন স্মার্ট জিনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। এই ডিপোর ৩৫ লাখ শেয়ারের মধ্যে ১ লাখ ৩৮ হাজার শেয়ার রয়েছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের নামে। তাঁর ভাই পরিচালক মুজিবুর রহমানের নামে আছে ১৫ হাজার শেয়ার। আর স্মার্ট জিনসের নামে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার। নেদারল্যান্ডসের প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালে এই ১৮ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার স্মার্ট জিনসের কাছে হস্তান্তর করে। নেদারল্যান্ডসের মেসার্স প্রঙ্ক পার্টিসিপেটের নামে আছে ১৫ লাখ ১১ হাজার শেয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
বিই/টিসি