ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শ্রমিকদের কর্মবিরতির প্রভাব, বাড়ছে চা পাতার দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
শ্রমিকদের কর্মবিরতির প্রভাব, বাড়ছে চা পাতার দাম ...

চট্টগ্রাম: সময়মতো চা পাতা উত্তোলন না করায় চট্টগ্রামের ২১টি বাগান মালিকের ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি টাকার বেশি। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ হওয়ায় ১৫ দিন কর্মবিরতি শেষে কাজে যোগ দেন এখানকার প্রায় ১৬ হাজার শ্রমিক।

 

বর্তমানে সবুজ চা পাতা সংগ্রহ শুরু হলেও বড় হয়ে যাওয়া পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণের অনুপযোগী হওয়ায় কমেছে সরবরাহ। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়তে শুরু করেছে খোলা ও প্যাকেটজাত চা পাতার দাম।

২১টি বাগান থেকে দৈনিক প্রায় ৪ লাখ কেজি  চা পাতা সংগ্রহ করা হয়।  

বাগান মালিকরা বলছেন, শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে সংগ্রহ করা যায়নি প্রায় ৪৫ লাখ কেজি সবুজ চা পাতা। এসব পাতা প্রক্রিয়াজাত করে পাওয়া যেতো প্রায় ১১ লাখ কেজি চা পাতা।

চট্টগ্রামের ২১টি চা বাগানের মধ্যে ১৭টিই ফটিকছড়িতে অবস্থিত। উপজেলার রাঙাপানি চা বাগানের ব্যবস্থাপক উৎপল বিশ্বাস বলেন, রাঙাপানি চা বাগান থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার কেজি সবুজ চা পাতা সংগ্রহ করা হয়। চা শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে ১১ দিনে এই বাগান থেকে প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজার কেজি পাতা সংগ্রহ করা যায়নি। পাতাগুলো বড় হয়ে যাওয়ায়  প্রক্রিয়াজাতও করা যায়নি। চলতি মৌসুমে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম হতে পারে।

ফটিকছড়ির নেপচুন চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার কাজী ইরফান উল্লাহ বলেন, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাস চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। এবছরও চট্টগ্রামে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সময়মতো পাতা সংগ্রহ না করায় নতুন কুঁড়ি গজানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কর্মবিরতির কারণে  সরকারও প্রায় ৩৫ কোটি  টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চায়ের দাম প্রতিকেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সর্বশেষ ১৫ ও ১৬তম নিলামে কেজিপ্রতি চায়ের গড় দাম ছিল ২২০ টাকা। সোমবার (২৯ আগস্ট) ১৭তম নিলামে বিক্রির জন্য প্রস্তাব করা হচ্ছে ৪৬ হাজার ৪৮৯ প্যাকেজে (প্রতি প্যাকেজে ৫০ কেজি) ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৮০১ কেজি। স্বাভাবিকভাবেই নিলামে চা সরবরাহ কমে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের নিলামে দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশের বেশি চা বিক্রি হয়। ৪ কেজি ৫০০ গ্রাম সবুজ পাতায় এক কেজি প্রক্রিয়াজাত চা পাতা তৈরি হয়।  

বাংলাদেশ টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে। সরবরাহ কমে গেলে চাহিদার কারণে দামে প্রভাব পড়বে।  

বাংলাদেশি চা সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চা মৌসুম। আগস্ট মাসে কাঙ্ক্ষিত চা পাতা উত্তোলন না হওয়ায় এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কষ্ট হবে। নিলামে দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই খুচরা ও পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২ 
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।