ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কারাবাসের বদলে এক বছর পড়তে হবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
কারাবাসের বদলে এক বছর পড়তে হবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দুই আসামি

চট্টগ্রাম: নগরের বন্দর থানার এক কেজি গাঁজার মাদকের মামলায় অভিযোগ গঠনের দিন আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন দুই আসামি। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় কারাদণ্ডের পরিবর্তে এক বছর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার ও দুইটি এতিমখানায় দুইজনকে বাংলা অনুবাদসহ দুইটি কুরআন শরিফ দেওয়া আদেশ দিয়ে এক বছরের প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।

 

সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। এ সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

সাধারণত এসব মামলায় আসামিকে এক বছরের সাজা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে আসামিদের সংশোধনের সুবিধার্থে শর্তসাপেক্ষে প্রবেশন কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে থাকার রায় দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গণি। আসামি দুইজন হলেন- মোহাম্মদ হোসেন (৪২) ও আব্দুর  রহিম (৩০)।  

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ মে বন্দর থানার পোর্ট কলোনি ১ নম্বর রোডের নতুন মার্কেট জামে মসজিদের সামনে থেকে ১ কেজি গাঁজাসহ মোহাম্মদ হোসেন ও আব্দুর রহিমকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে দুইজনের নামে মামলা করে। গত ২৯ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইয়াছিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।  

আদালতে রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসুলি সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোহাম্মদ রায়হাদ চৌধুরী রনি বাংলানিউজকে বলেন, এক কেজি গাঁজার উদ্ধারের মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে আজ অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে আসামি দুইজন দোষ স্বীকার করে। দুই আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডের বদলে এক বছরের প্রবেশন দিয়েছেন আদালত। এ সময় দুই আসামিকে এক বছর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার ও দুইটি এতিমখানায় দুইজনকে বাংলা অনুবাদসহ দুইটি কুরআন শরিফ দেওয়া আদেশ দিয়েছেন আদালত।  

আসামি পক্ষের আইনজীবী সঞ্জয় দে বাংলানিউজকে বলেন, দুই আসামির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের মামলা ছিল না। আদালতে দোষ স্বীকার করায় অতীতে কোনো ধরনের মামলা না থাকায় সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন। আদালতের দেওয়া আদেশে আমরা সন্তুষ্ট।

আসামি মোহাম্মদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের আদেশে আমরা দুইজনই সন্তুষ্ট। আমরা আদেশ মেনে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ব। এতিমখানায় কুরআন শরিফ দিয়ে দেব। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকার সময় অনেক কষ্ট হয়েছিল। এখন সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করব।

গত ১৪ জুন একই আদালত মানহানি মামলায় ফাহমিদা রহমান নামে এক কণ্ঠশিল্পীকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডের বদলে ছয় মাসের প্রবেশন দিয়েছিলেন। প্রবেশনের এ সময়ে আসামি নগরের খুলশী নজরুল অ্যাকাডেমিতে ছয় মাস গান শিখাবেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনে আসামির (ফাহমিদা) গাওয়া দুইটি গানের সম্মানী (টাকা) নিয়ে সে টাকায় কবি নজরুলের লেখা বই অথবা তাঁকে নিয়ে লেখা বই জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।