চট্টগ্রাম: প্রতিদিন প্রায় ২৪৯ টন প্লাস্টিক ও পলিথিন জাতীয় বর্জ্য কর্ণফুলীতে নদীতে পড়ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। যা মাছসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করছে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী পিয়াল বড়ুয়া ও আল আমিন।
চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগ ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের যৌথভাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনের জানানো হয়, চট্টগ্রাম শহরে প্রতিদিন তিন হাজার টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এরমধ্যে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ হিসাবে ২৪৯ টন হচ্ছে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য। এসব বর্জ্যের মধ্যে আবার ৩৫.৬১ ভাগ পুনরায় ব্যবহারযোগ্য। নদীতে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নদীর তলদেশ কিংবা অন্যান্য স্তরে ভাসতে থাকা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করছে। এসব মাছ খাদ্য হিসেবে মানুষ গ্র্রহণ করায় মানবদেহে মিশে যাচ্ছে ক্ষতিকর কেমিক্যাল মাইক্রোপ্লাস্টিক। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ক্রমাগত প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য সৃষ্টির পেছনে সাধারণ মানুষের অসচেতনতা, যত্রতত্র ছুড়ে ফেলা, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকা, প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়াকে দুষছেন গবেষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) উপাচার্য ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কর্ণফুলী সংকটে পড়লে সংকটে পড়বে চট্টগ্রামের মানুষ, তথা পুরো দেশ। এ নদীকে বাঁচাতে হলে সবার আগে পলিথিনের উৎপাদন সমূলে বন্ধ করতে হবে। এজন্য সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
চট্টগ্রামের নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আলীউর রহমান বলেন, পুরো চট্টগ্রাম মহানগরীর পলিথিন বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে মিশছে। এতে নদীর তলদেশে পলিথিনের বড় স্তর জমেছে। প্লাস্টিক সহজে রিসাইকেল করা গেলেও পলিথিন সহজে রিসাইকেল করা যায় না। এসব পলিথিন নদী থেকে সাগর পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। এতে মাছের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে কর্ণফুলী নদীতে মাছের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম পরিবেশ ফোরাম চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার পালিত, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, চট্টগ্রাম চেপ্টারের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, পরিবেশ সংগঠক মনোজ কুমার দেব প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২
এমআর/টিসি