ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাকা’র ‘গুডস হিল’ ঘেরাও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
সাকা’র ‘গুডস হিল’ ঘেরাও ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বাসভবন ‘গুডস হিল’ ঘেরাও করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড।

নগরের চকবাজার থানাধীন গনি বেকারীর মোড়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই ‘গুডস হিল’।

 

শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে  ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলল শৈবাল দাশ সুমনসহ বিশিষ্টজনরা যোগ দেন।  

কর্মসূচি পালনকারীরা গুডস হিলের প্রবেশপথে দেওয়ালে লিখেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্যাতন কেন্দ্র-রাজাকারের বাড়ি’।

এসময় তারা সেখানে প্রতীকী তালাও ঝুলিয়ে দেন। উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকা।

‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় মৌলবাদীর ঠাঁই নাই’ লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভও করেন ঘেরাওকারীরা।

সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা বলেন, বঙ্গবন্ধু, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ শব্দগুলো আমাদের অস্তিত্ব। সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী সাকাকে তার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ‘শহীদ’ বলায় আমরা মনে করি এটা লাল সবুজের পতাকার অবমাননা। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে নির্যাতন করা হতো সাকা চৌধুরীর গুডস হিলের বাড়িতে। পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনীকে সঙ্গে করে নিয়ে বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের নারীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতো এই যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরী। মূলত পাকিস্তানি হানাদারদের পথপ্রদর্শক এবং বাঙালি যুবক, বুদ্ধিজীবী ও সংখ্যালঘুদের গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিল চট্টগ্রামের এই কুখ্যাত সাকা চৌধুরী।  তার ছেলের বক্তব্যের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।  

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিএনপির মহাসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ‘আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি বড় নেতা হিসেবে নয়। আজকে এসেছি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হিসেবে। আপনারা সবাই সঙ্গে থাকলে আমাদের পরাজিত করার শক্তি কারও নেই। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলে দিতে চাই, ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর একা বাড়ি যেতে পারবেন না। প্রতিটি শহীদের পরিবার থেকে ক্ষমা চেয়ে যেতে বাধ্য করা হবে। যাওয়ার আগে আমার বাবার স্লোগান আপনাদের বলে যেতে চাই। ’

এরপর হুম্মাম কাদের জামায়াতে ইসলামীর স্লোগান তিন বার ‘নারায়ে তাকবির’বললে প্রতিবারই ‘আল্লাহ আকবর’ বলে পাল্টা সাড়া দেন মাঠে উপস্থিত বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর বলেন, ‘আমরা আবার যখন এই পলোগ্রাউন্ড মাঠে আসবো, তখন সরকার গঠন করেই আসবো। ’

হুম্মাম কাদেরের দেওয়া এই বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত বক্তব্য। এর সঙ্গে বিএনপির কোনও সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপি এর দায়ভার নেবে না। ’

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ‘গুডস হিল’ ঘেরাও কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে জামালখান চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে মশাল মিছিল বের করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।